আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় আরও এক জনকে গ্রেফতার করল সিবিআই। আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ-‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত চিকিৎসক আশিস পাণ্ডেকে গ্রেফতার করেছে তারা। সিবিআই সূত্রে খবর, ধৃত আশিস তৃণমূলের ছাত্রনেতা। এর আগে এক দিন সিবিআইয়ের দফতরে হাজিরাও দিয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি হাসপাতালে ‘হুমকি সংস্কৃতি’তে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ২৫ সেপ্টেম্বর ‘হুমকি সংস্কৃতি’তে অভিযুক্তদের আরজি কর হাসপাতালে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আশিসও।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় আগেই গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ। এ বার সেই মামলায় গ্রেফতার করা হল আশিসকে। এখনও পর্যন্ত এই মামলায় পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, আরজি কর হাসপাতালে যে দিন তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়, সেই ৯ অগস্ট সল্টলেকের একটি গেস্ট হাউসে উঠেছিলেন আশিস। তদন্তকারীদের একটা অংশ মনে করেন, আরজি করের ঘটনায় জড়িত থাকতে পারেন তিনি। সেই কারণে আশিসকে সিজিও দফতরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আশিস ঘটনার দিন সল্টলেকের যে গেস্ট হাউসে উঠেছিলেন বলে খবর, সেখানকার কর্মীকেও নথি-সহ ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা।
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে এক চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ উঠেছে। ওই রাতেই ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগে কলকাতা পুলিশের এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে এই মামলার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। তখন ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে হেফাজতে নেয় তারা। আদালতের অনুমতিতে অভিযুক্তের পলিগ্রাফ পরীক্ষাও করানো হয়। পরে এই মামলায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে সন্দীপ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
আরজি কর-কাণ্ডের আবহে অভিযোগ উঠেছে, তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি চলেছে। তার তদন্তের জন্য গত ১৬ অগস্ট রাজ্য সরকারের তরফে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হয়েছিল। নেতৃত্বে ছিলেন আইপিএস অফিসার প্রণব কুমার। রাজ্য পুলিশের সিটের উপর আস্থা নেই, এই দাবিতে আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্তভার ইডিকে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলায় বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের একক বেঞ্চ জানিয়েছিল, একাধিক সংস্থা তদন্ত করলে বিষয়টি আরও জটিল ও সময়সাপেক্ষ হতে পারে। এর পরেই সিবিআইকেই আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তভার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত। তার পরেই আর্থিক দুর্নীতি মামলায় একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। হাসপাতালের একাধিক কর্তার বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন তাঁরা।