‘বন্যাসুরে’র গ্রাসে পদ্ম, পিস ৫০ টাকা মাথায় হাত পুজো উদ্যোক্তাদের
বর্তমান | ০৪ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বন্যার জেরে বাঁকুড়ায় পদ্মের আকাল দেখা দিয়েছে। ফলে দুর্গাপুজোর জন্য জরুরি এই ফুল রাতারাতি মহার্ঘ হয়ে গিয়েছে। মাসখানেক আগেও যে পদ্ম পাঁচ টাকা প্রতি পিস দরে বিক্রি হচ্ছিল, তার দাম বর্তমানে ৫০টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এমনকী, ওই টাকাতেও বাজারে ফুল সেভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। পদ্মের পাশাপাশি গাঁদা সহ অন্যান্য ফুলের দামও অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। জলে ডুবে ফুলগাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই কারণে ফুলের চড়া দাম বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। এদিকে, ব্যবসায়ীরা অর্ডার না নেওয়ায় পুজো উদ্যোক্তারা সমস্যায় পড়েছেন। কীভাবে পুজোর সময় পদ্মের জোগান দেওয়া যাবে তা নিয়ে তাঁরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
বাঁকুড়া শহরের পুজো উদ্যোক্তা সৌমেন পাল বলেন, সাধারণত দুর্গাপুজোর সপ্তাহখানেক আগে আমরা পুজোর ফুলের অর্ডার দিয়ে থাকি। সেইমতো শহরের একটি ফুলের দোকানে গিয়েছিলাম। সেখানে অন্যান্য ফুল পাওয়া গেলেও পদ্ম ছিল না। ৫০টাকা প্রতি পিস পদ্মের দাম পড়বে বলে বিক্রেতা জানিয়েছেন। তবে জোগান কম থাকায় তিনি অর্ডার নিতে চাননি। শহরের মাচানতলার ফুল ব্যবসায়ী বরেণ সরকার বলেন, বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন ব্লক এলাকা থেকে আমাদের দোকানে পদ্ম আসে। পাশাপাশি কোলাঘাটের ফুল বাজার থেকেও পদ্ম পাইকারি দরে আনা হয়। এদিন কোলাঘাটের বাজারে লাল পদ্ম প্রতিপিস ৫০টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ওই দামে ফুল এনে বিক্রি করা মুশকিল। তাছাড়া, সেখানে অন্যান্য সময় রাশি রাশি পদ্ম বিক্রি হয়। এদিন গুটিকয় ব্যবসায়ী ৫০-৬০টি করে পদ্ম নিয়ে বসেছিলেন। ফলে খুচরো বিক্রেতারা ওই পদ্মে হাত দিতে পারেননি।
উল্লেখ্য, বাঁকুড়ায় লাল পদ্মের পাশাপাশি সাদা পদ্মও বিক্রি হয়। লাল পদ্মের চাহিদা ও দাম বেশি থাকে। তবে তা ৫-১০টাকার মধ্যেই সাধারণত ঘোরাফেরা করে। পুজোর সময় তা বেড়ে ১৫টাকা পর্যন্ত হয়। তবে এবারের বন্যায় হুগলি ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বহু জলাশয় ভেসে যায়। দীর্ঘদিন ধরে জলের তলায় থাকার কারণে পদ্ম ফুল নষ্ট হয়ে যায়। পদ্মপাতাও পচে যায়। সেই কারণে ফলন মার খায়। বাঁকুড়া জেলার বিস্তীর্ণ এলাকাও এবার ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত হয়। নিম্নচাপের বৃষ্টিতেও অনেক জায়গায় জল জমে যায়। ফলে গাঁদা সহ অন্যান্য ফুলের বাগানও নষ্ট হয়ে যায়।
সেই কারণে পদ্ম সহ অন্যান্য ফুলের দাম হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এমনকী, হিমঘরে মজুত ফুল বাইরে এনেও চাহিদা সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।