• নিম্নচাপে বৃষ্টিতে মাথায় হাত পুজো উদ্যোক্তাদের
    বর্তমান | ০৪ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বোলপুর: ফের নিম্নচাপের ভ্রূকুটি, ফের আকাশের মুখভার। মুখভার বোলপুরের বিভিন্ন পুজোর উদ্যোক্তাদেরও। নির্দিষ্ট সময়ে প্রতিমা ও মণ্ডপের কাজ শেষ হবে তো! দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে কর্মকর্তাদের। গত ২ অক্টোবর মহালয়ার পুণ্যতিথিতে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে উৎসবের ঢাকে কাঠি পড়েছে। কিন্তু মফস্সলের অধিকাংশ পুজোর মণ্ডপসজ্জা ও প্রতিমার কাজ এখনও চলছে। এর মাঝেই বৃহস্পতিবার থেকে আকাশের মুখভার। এদিন প্রবল বৃষ্টিতে সবকিছু ধুয়ে যাওয়ার জোগাড় হয়। বোলপুর শহরে সর্বজনীন পুজোর সংখ্যা নেহাত কম নয়। প্রতিটি পুজোতেই একমাস আগে থেকে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। কিন্তু মহালয়ার পর পরই ফের নিম্নচাপ উতসবে জল ঢালবে না তো! আশঙ্কায় উৎসবপ্রিয় বাঙালি। 


    থিমের অভিনবত্ব ও মণ্ডপসজ্জায় বোলপুরে যে ক’টি সর্বজনীন পুজো নিজেদের সেরাটা দেয় তার মধ্যে অন্যতম বোলপুর অ্যাথলেটিক্স অ্যান্ড কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন। এ বছরে তাদের পুজো ৩৮-এ পা দিল। ‌ছোটদের মনোরঞ্জনের বিষয়টি মাথায় রেখে তারা গ্রাম বাংলার প্রকৃতি ও বিভিন্ন জন্তু-জানোয়ারের প্রতিকৃতি দিয়ে মণ্ডপ সাজাচ্ছে। সেই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে স্পঞ্জ, তার, বাতা, কাপড় প্রভৃতি উপকরণ। পুজোর বাজেট সাড়ে ছ’ লক্ষ টাকা। মণ্ডপ নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু বৃহস্পতিবার বৃষ্টির জন্য বারবার সাজানোর কাজ বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্লাবের সম্পাদক তপন দলুই ও কোষাধ্যক্ষ অতনু ঘোষ। তাঁরা বলেন, বারবার নিম্নচাপের কারণে এখনও মণ্ডপের কাজ শেষ হয়নি। প্রবল দুশ্চিন্তায় রয়েছি।


    জামবুনি সর্বজনীন দুর্গাপুজো সমিতিরও একই অবস্থা। ৪১ বছরের পুরনো এই পুজো কমিটির এ বছরের থিম ‘মাটির টানে মৃন্ময়ী’।‌ ক্লাবের সদস্য তাপস দাস বলেন, আমাদের পুজোর বাজেট প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা। পোড়ামাটির বিভিন্ন উপকরণ, মা দুর্গার মুখাবয়ব প্রভৃতি দিয়ে মণ্ডপকে চমৎকারভাবে সাজিয়ে তুলছেন কলাভবনের প্রাক্তন ছাত্র ও শিল্পী প্রণোতোষ্মী নন্দী। কিন্তু বৃষ্টিতে সেই কাজ কার্যত ধুয়ে যাওয়ার জোগাড়। নির্দিষ্ট সময়ে কীভাবে মণ্ডপসজ্জা শেষ হবে এই নিয়ে সবাই উদ্বেগে রয়েছেন। 


    একইভাবে ‘মাটির কলসে মাটির মা’ এই থিমে এ বছর পুজো মণ্ডপ সাজাচ্ছে বোলপুরের অন্যতম প্রাচীন বারোয়ারি আদ্যাশক্তি সঙ্ঘ। এ বছর হাড়ি, কলসি, বিভিন্ন মূর্তি দিয়ে সাজানো হচ্ছে মণ্ডপ। তাদের বাজেট ৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু, মূর্তি নির্মাণ সম্পূর্ণ হলেও মণ্ডপসজ্জার অনেক কাজ বাকি। এ নিয়ে উদ্বেগে ক্লাবের সদস্যরা। কমিটির সভাপতি তথা স্থানীয় কাউন্সিলার শিবনাথ রায় বলেন, এ বছর নিম্নচাপের বৃষ্টি আমাদের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। বারবার বৃষ্টিতে মণ্ডপসজ্জায় ব্যাঘাত ঘটছে। কবে কাজ শেষ হবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। সামগ্রিকভাবে বোলপুরের অধিকাংশ পুজো কমিটিরই একই অবস্থা। এমতাবস্থায় মা দুর্গার কাছে সকলেই প্রার্থনা করছেন, তাড়াতাড়ি যাতে নিম্নচাপ কেটে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করবে, সে সাধ্য কার! তাই আশা আশঙ্কার দোলাচলে বোলপুরের বিভিন্ন পুজোর উদ্যোক্তারা।
  • Link to this news (বর্তমান)