• মালবাজারে পথবাতি নিয়েও এবার বড় কেলেঙ্কারির ইঙ্গিত
    বর্তমান | ০৪ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: মালবাজার শহরে পথবাতি বসানো নিয়েও এবার বড়সড় আর্থিক কেলেঙ্কারির ইঙ্গিত। অভিযোগ, ই-টেন্ডার না করেই লক্ষ লক্ষ টাকার পথবাতির বরাত দেওয়া হয় একাধিক সংস্থাকে। মাল পুরসভার প্যাডে লেখা ওইসব ওয়ার্ক অর্ডারের কপিতে সই রয়েছে চেয়ারম্যান স্বপন সাহার। ২০২২-’২৩ সালে ইস্যু করা ওয়ার্ক অর্ডারের কপি সামনে আসতেই শুরু হয়েছে তোলপাড়। যদিও ওইসব ওয়ার্ক অর্ডারের সত্যাসত্য যাচাই করেনি ‘বর্তমান’। স্বপন বিরোধী তৃণমূল কাউন্সিলারদের অবশ্য অভিযোগ, অর্থদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই কোনওরকম ই-টেন্ডার না করে নিজের পছন্দের ঠিকাদার সংস্থাকে এভাবে ওয়ার্ক অর্ডার দিয়েছেন চেয়ারম্যান। যদিও চেয়ারম্যান স্বপন সাহার দাবি, যেসব ওয়ার্ক অর্ডারের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলি ভুয়ো। এনিয়ে এফআইআর করা আছে। তবে জেলার পুলিস সুপার খণ্ডবাহালে উমেশ গণপত বলেন, এমন কোনও এফআইআরের কথা আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।


    অভিযোগ, চেয়ারম্যান ভুয়ো ওয়ার্ক অর্ডার বললেও সৌরবাতির কাজের জন্য মাল পুরসভায় লক্ষ লক্ষ টাকার বিল জমা পড়েছে। সেসব বিল পুরসভার তরফে রিসিভও করা হয়েছে। পুরসভার সিল মারা ২০২৩ সালে জমা পড়া এমন একাধিক বিলও প্রকাশ্যে এসেছে। তার কোনওটিতে দেখা যাচ্ছে, ২৪ লক্ষ ৮৯ হাজার ৭৭১ টাকার বিল। কোনওটির বিল ৬৭ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। সৌরবাতির জন্য ২০২৩ সালের অক্টোবরে জমা পড়া একটি বিলের পরিমাণ ২২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। যদিও এসব বিলের সত্যতা যাচাই করেনি ‘বর্তমান’। তবে পুরসভার ফিনান্স অফিসার মিঠুন দাস বলেন, আমার কাছে এমন কোনও বিল আসেনি। ফলে পেমেন্ট হওয়ার প্রশ্ন নেই।


    সম্প্রতি সামনে আসা সমস্ত ওয়ার্ক অর্ডারের কপি সহ নানা নথি হাইকোর্টে জমা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী সুমন শিকদার। মাল পুরসভার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করেছেন তিনি। ৭ নভেম্বর শুনানি। সুমন বলেন, মাল পুরসভার দুর্নীতি নিয়ে কিছু নথি আদালতে জমা দিয়েছি। শুনানির দিন আরও নথি জমা করব।


    অভিযোগ, সামনে আসা নথিতে দেখা যাচ্ছে ২০২৩ সালের ৭ আগস্ট মাল পুরসভার প্যাডে শিলিগুড়ির একটি সংস্থাকে সোলার হাইমাস্টের বরাত দেওয়া হয়। ১০টি হাইমাস্টের জন্য খরচ ধরা হয় ৪ লক্ষ ৯৭ হাজার ৯৫৪ টাকা। ২০২৩ সালের ১৪ জুলাই সৌর পথবাতির বরাত দেওয়া হয়। সেখানে ১৫০টি পথবাতির খরচ ৩৯ হাজার ২০২ টাকা। ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর হাওড়ার একটি সংস্থাকে ১৫টি হাইমাস্ট লাইটের বরাত দেওয়া হয়। যার প্রতিটির দাম ছিল ৪ লক্ষ ৯৭ হাজার ৯৫৪ টাকা।


    কাউন্সিলার পুলিন গোলদারের তোপ, প্রথমত ই-টেন্ডার করে এসব ওয়ার্ক অর্ডার হয়নি। তারপর পথবাতির যা দাম, তার চেয়ে অনেক বেশি দরে বরাত দেওয়া হয়েছে। এসবের তদন্ত হওয়া দরকার।   বিতর্কিত ওয়ার্ক অর্ডার। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)