প্লাবিত এলাকার দিঘিগুলিতে পদ্ম নেই, পুজোর মুখে বাড়তি আয় বন্ধ
বর্তমান | ০৪ অক্টোবর ২০২৪
সোমেন পাল, গঙ্গারামপুর: দুর্গাপুজোর কিছুদিন আগে থেকে জেলায় অবিরাম বৃষ্টি। প্লাবিত হওয়ায় বিল ও দিঘির পদ্ম কিছুটা ভেসে গিয়েছে। বাকিটা পচে নষ্ট হওয়ায় এবার আর সেখান থেকে জোগান পাওয়া যাবে না। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি এখন আফসোসের সুর কুশমণ্ডি গোবড়াবিল এলাকার পাড়ের বাসিন্দাদের। বিলের পদ্ম বেচে পুজোর আগে বাড়তি কিছু রোজগার হত এলাকার বাসিন্দাদের। সেই টাকায় বাড়ির ছোটদের জামাকাপড়ের ব্যবস্থা করতেন অভিভাবকরা। চারটে দিন কাটাতেন আনন্দে। এবার সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে প্রকৃতি।
কুশমণ্ডির গোবড়া, ঠেঙ্গাপাড়ার মহিপুর, শ্যাম্পুর বিল ও তপন দিঘি থেকে পদ্ম তুলে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্রি করতেন জেলার ফুল বিক্রেতাদের কাছে। এবার লাগাতার বৃষ্টি ও বন্যা পরিস্থিতির জন্য পদ্মের আকাল দেখা দিয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পদ্মের চাহিদার একটা বড় অংশ আসে কুশমণ্ডিতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের জিরো পয়েন্টের গোবড়াবিল থেকে। গ্রামের একাংশ কৃষক ও যুবকরা সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর জওয়ানদের অনুমতি নিয়ে কাঁটাতারের ওপারে জমির কাজ করার পর বিল থেকে পদ্ম সংগ্রহ করে ফিরতেন। পদ্ম বিক্রির রোজগার থেকে পুজোর পাঁচটা দিন পরিবার নিয়ে আনন্দে কাটাত ফুল সংগ্রহকারী পরিবারগুলি। এবার তাঁদের গ্রামে বিষাদের সুর।
গোবড়াবিল এলাকার অনন্ত সরকারের কথায়, জিরো পয়েন্টে গোবড়াবিলে আমাদের জমি থাকায় পদ্ম তুলে বিক্রি করে পুজোর সময় বাড়তি রোজগার হতো। সবার নতুন জামাকাপড় কিনতাম সেই টাকা থেকে। দু’সপ্তাহ আগেও প্রচুর পদ্ম ছিল বিলে। বৃষ্টিতে জল বেড়ে যাওয়ায় সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এবার আর পুজোয় পরিবার নিয়ে সেভাবে আনন্দ করতে পারব না।
জোগান অনিশ্চিত দেখে জেলার ফুল ব্যবসায়ীরা নদীয়ার রানাঘাটে যোগাযোগ করেছেন। ওড়িশা থেকে পদ্ম আসা শুরু হলেও দাম শুনে মাথায় হাত বিক্রেতাদের। একটি ফুলের দাম পড়ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। তাই ক্ষতির আশঙ্কায় অর্ডার না হলে আগাম পদ্ম নিয়ে আসতে নারাজ ফুল ব্যবসায়ীরা। গঙ্গারামপুরের ফুল ব্যবসায়ী কালী রায়ের কথায়, কুশমণ্ডির গোবড়াবিল, মহিপুর, শ্যামপুর বিল, তপন দিঘি থেকে ফুল সংগ্রহকারীরা পুজোর কয়েকদিন আগে থেকে আমাদের পদ্ম দিয়ে যেতেন। সেগুলি সংগ্রহ করে হিমঘরে রাখা হত। এবার জেলায় পদ্মের জোগান তলানিতে। বাইরে থেকে যেগুলি আসছে, দাম শুনে উদ্যোক্তারা নেবেন কিনা চিন্তায় আছি। নিজস্ব চিত্র।