উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের অধ্যক্ষকে অপসারণের দাবি জানিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তার কাছে চিঠি পাঠাতে চলেছেন ওই মেডিক্যাল কলেজের বিভিন্ন বিভাগের প্রধানেরা। অভিযোগ, কারচুপি করে বাছাই করা পড়ুয়াদের নম্বর বৃদ্ধি করা হয়েছিল মার্কশিটে। আর এ সবের নেপথ্যে ছিলেন অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা। সম্প্রতি এই অভিযোগ নিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তাকে রিপোর্ট পাঠানো হয়। বিভাগীর প্রধানদের অভিযোগ, তার পরে এখনও পর্যন্ত তা নিয়ে কোনও তদন্ত শুরু হয়নি। কেন পদক্ষেপ শুরু করা হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন বিভাগীয় প্রধানেরা। চিঠিতে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।
আরজি কর-কাণ্ডের আবহে অভিযোগ উঠেছে, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে দীর্ঘ দিন ধরে দুর্নীতি চলছে। নম্বর নিয়ে জালিয়াতি থেকে শুরু করে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে এই মেডিক্যাল কলেজে। ‘হুমকি সংস্কৃতি’তে প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। আর এই অভিযোগে নাম জড়িয়েছে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিতের। বিভাগীয় প্রধানদের দাবি, তিন জনের কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু হলেও সেই তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়নি৷ এই অভিযোগে অধ্যক্ষের পাশাপাশি নাম জড়িয়েছিল ডিন, সহকারী ডিন, আরএমওর। বাকি তিন জন পদত্যাগ করলেও অধ্যক্ষ এখনও নিজের পদে বহাল রয়েছেন। বিভাগীয় প্রধানেরা এ বার সেই অধ্যক্ষকে অপসারণের দাবি জানিয়ে স্বাস্থ্য ভবনকে চিঠি দিতে চলেছেন। চিঠিতে এখন পর্যন্ত ১৬ জন বিভাগীয় প্রধান সই করেছেন।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অর্থপেডিক বিভাগের প্রধান পার্থসারথি সরকার বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে সব রকম দুর্নীতিতে বার বার অধ্যক্ষের নাম জড়িয়েছে। সেই সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা, সমস্ত বিভাগের প্রধানেরা একটি চিঠি জমা দিচ্ছি স্বাস্থ্য দফতরে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করা হোক। পরীক্ষার নম্বর জালিয়াতির মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। আগামী কিছু দিনের মধ্যে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষা রয়েছে। অধ্যক্ষ পদে ইন্দ্রজিৎ বহাল থাকলে সেই পরীক্ষা কোনও ভাবে নেওয়া সম্ভব নয়। আমাদের তাঁর উপর কোনও ক্ষোভ নেই, কিন্তু অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা প্রয়োজন।’’ অন্য দিকে, ইন্দ্রজিৎ এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘আমার এ বিষয়ে কিছু বলার নেই।’’