হুগলির চাঁপদানির ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত ধর্মতলা গার্লস হাই স্কুল এবং ধর্মতলা প্রাইমারি স্কুল। দুই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে দীর্ঘ দিনের মনোমালিন্য। দুটি স্কুল একই ক্যাম্পাসে হলেও দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সম্পর্ক আদায় কাঁচকলায়। পুজোর ছুটির আগে দুই স্কুলের রেষারেষি উঠল তুঙ্গে। প্রাথমিক স্কুলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল গার্লস স্কুলের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, পানীয় জলও বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার এ নিয়ে দুই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা শুরু করলেন ঝগড়া। বন্ধ হল পড়াশোনা। পরিস্থিতি এমন জায়গায় গেল যে স্কুল চত্বরে যেতে হল পুলিশকে।
প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, স্কুল প্রাঙ্গণে একটি হলঘর রয়েছে। কিন্তু সেটা ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না তাদের। পড়ুয়ারা মাটিতে বসেই মিড ডে মিল খায়। শুক্রবার বিদ্যুৎ পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এক প্রাথমিক শিক্ষক বলেন, ‘‘গরমে শিশুদের কষ্ট হচ্ছে। এই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করেন অভিভাবকেরা। স্কুলে তালাও দিয়ে দেওয়া হয়। আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি।’’ প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকাদের অভিযোগ, ‘‘স্কুলে বড় হল আছে। কিন্তু অনুষ্ঠান করতে গেলে আমাদের বাইরে যেতে হয়। ওই হলে আমাদের স্কুলে পা দিতে দেওয়া হয় না। কিন্তু ওই হল যখন তৈরি হয়, তখন কথা ছিল সবাই ব্যবহার করতে পারবেন সেটা।’’ গার্লস স্কুলের শিক্ষিকারা অবশ্য কোনও অভিযোগই মানতে চাননি। শুক্রবার গন্ডগোলের খবর পেয়ে স্কুলে উপস্থিত হন চাঁপদানির ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শ্রীকান্ত মণ্ডল। খবর পেয়ে আসে ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশও। আইসি আশিস দোলুই শিক্ষিকাদের সঙ্গে কথা বলেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক স্কুলটির সাড়ে চার হাজার টাকা বিদ্যুতের বিল বাকি ছিল। সেটা জটিলতা মেটানোর চেষ্টা হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউন্সিলর বিদ্যুতের বিল মেটান বলে খবর। পুলিশের তরফে হাই স্কুলের শিক্ষিকাদের জানানো হয়, কোনও অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট দফতরে জানাতে। কিন্তু জল এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করা যাবে না। কাউন্সিলরের তরফে প্রাথমিক স্কুলকে বলা হয়েছে, বিদ্যুতের আলাদা মিটার বসাতে। কাউন্সিলর বলেন, ‘‘আমি বলেছি যাতে নিজেদের মধ্যে অশান্তি-না করেন দুই স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এতে তো ছোটদের মনেও প্রভাব পড়ে।’’