এই সময়, সামশেরগঞ্জ: পুজোর ঠিক আগেই কান্নার রোল মুর্শিদাবাদ জেলার সামশেরগঞ্জ ব্লক জুড়ে। শুক্রবার সকাল থেকেই ভয়াবহ ভাঙনের কবলে সামশেরগঞ্জের শিকদারপুর গ্রাম। গঙ্গার তলিয়ে যায় ১০টি বাড়ি, প্রচুর গাছপালা ও কৃষিজমি। আরও কিছু বাড়ি গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায়। কয়েক দিনে গঙ্গার জলস্তর কমেছিল বেশ কিছুটা। কিন্তু গত দু’দিনে আবার জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে ফের শুরু হয়েছে ভাঙন। হঠাৎ এমন বিপর্যয়ে বাড়ি থেকে কোনও কিছু সরানোর সুযোগ পাননি বাসিন্দারা। গ্রাম জুড়ে তাই সর্বগ্রাসী ভাঙনের হাহাকার। তারই মাঝে চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।ভাঙন বিধ্বস্ত তাপস দাস বলেন, ‘এত দিন গঙ্গার ওই পাড়ে ভাঙন হচ্ছিল। ভাবতেই পারিনি হঠাৎ এ পাড়েও ভাঙন শুরু হয়ে যাবে। কোনও রকমে প্রাণ বাঁচিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছি। আমাদের আর কিছুই থাকল না। পুজোর ঠিক মুখে বাড়িঘর হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেলাম। সরকার আগে থেকে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিলে আমাদের এই দুর্দিন দেখতে হতো না।’
গত বছর রাজ্য সরকার ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও ঠিক মতো কাজ হয়নি বলে তোপ দেগেছেন দলেরই চেয়ারম্যান জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘যে সমস্ত আধিকারিক ভাঙন প্রতিরোধের কাজের দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা ঠিকমতো কাজ করেননি। সেই আধিকারিক ও ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত। মুখ্যমন্ত্রীর বরাদ্দ টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। আমরা চাইব কেন্দ্র সরকার এ বার ভাঙন প্রতিরোধের কাজের দায়িত্ব নিক।’
অন্য দিকে, জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি ধনঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘কেন্দ্র সরকার ভাঙন প্রতিরোধে টাকা বরাদ্দ করলেও সঠিক সময়ে কাজ করা হচ্ছে না। বর্ষায় ভরা গঙ্গায় কাজ করে কোনও লাভ হচ্ছে না। রাজ্য সরকারের চরম উদাসীনতায় কাজ হচ্ছে না আর কেন্দ্র সরকারের উপর দায় চাপানো হচ্ছে। তৃণমূলের স্থানীয় সাংসদ ও বিধায়ক কেন্দ্র সরকারকে চিঠি দিক। আমি দায়িত্ব নিয়ে আগামী তিন মাসের মধ্যে কাজ শুরু করব।’