• কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা, স্বাস্থ্যসচিবের অপসারণ দাবি
    বর্তমান | ০৫ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডের প্রায় ৫৮ দিন পর অবশেষে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তবে রাজ্য সরকারকে নিজেদের দাবি পূরণের জন্য ২৪ ঘণ্টার ডেডলাইনও বেঁধে দিলেন তাঁরা। এবার তাঁদের দাবি, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের অপসারণ। আজ হঠাৎই ধর্মতলায় তাঁদের মঞ্চ তৈরিকে ঘিরে গোলমাল শুরু হয়। রাস্তার মোড়ে বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা। পুলিসের সঙ্গে শুরু হয় বচসাও। এর ফলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে রাস্তার একাংশ। সন্ধ্যাবেলায় চরম ভোগান্তির শিকার হন পথচলতি মানুষরা। এর কিছুক্ষণ পরই কর্মবিরতির কথা ঘোষণা করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। পাশাপাশি আজ, শুক্রবার তাঁরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের দাবিদাওয়া পূরণ না হলে আমরণ অনশন শুরু হবে। এছাড়া ডোরিনা ক্রসিংয়ে তাঁদের লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ চলবে বলেও জানিয়েছেন আন্দোলনকারী ডাক্তাররা। তাঁরা এদিন বলেন, আমরা কর্মবিরতি তুলে নিলাম। তবে কর্মবিরতি তুলছি মানে এই নয় যে আন্দোলন শেষ হচ্ছে। কোনও চাপের মুখে পড়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করছি তা একদমই ঠিক কথা নয়। আমরা বাধ্য হয়ে কর্মবিরতিতে গিয়েছিলাম। তবে সাধারণ মানুষের পরিষেবার কথা মাথায় রেখেই আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করছি।


    ইতিমধ্যেই মহালয়ার সন্ধ্যা থেকে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে উৎসবে ফিরেছে রাজ্যবাসী। মহালয়ার সন্ধ্যা থেকেই কলকাতা তথা জেলার একাধিক প্যান্ডেলে মানুষের ঢল। প্রতিমা দর্শনে পথে নেমেছে অগুন্তি মানুষ। ফলে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের মধ্যেও চাপ বাড়ছিল। মানুষ পাশে না থাকলে যে আন্দোলন বেশি দূর টেনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, তা ভালোভাবেই বুঝতে পারছিলেন তাঁরাও। ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় বারবার প্রশ্ন করেছেন, জুনিয়র চিকিৎসকরা কি কাজে ফিরেছেন? জবাবে ডাক্তারদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং জানান, তাঁরা কাজে ফিরছেন। এরপর প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, চিকিৎসকদের ওপিডি, আইপিডিতে কাজ করতে হবে। কিন্তু প্রধান বিচারপতির এই স্পষ্ট নির্দেশের পরও নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করেননি চিকিৎসকরা। সূত্রের খবর, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার বিষয় নিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের অন্দরেও আড়াআড়ি বিভাজন দেখা দিয়েছিল। যতদিন যাচ্ছিল সেই বিভাজনটি ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছিল। পাশাপাশি জনমতের সমর্থনও ক্রমাগত হারাচ্ছিলেন তাঁরা। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই এদিন তাঁরা কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই মনে করছেন অনেকে।
  • Link to this news (বর্তমান)