• ‘‌আমি দশ বছর ধরে লড়াই করছি’‌, বাংলা ভাষা ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি নিয়ে দাবি মমতার
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৫ অক্টোবর ২০২৪
  • হাতে আর বেশি সময় নেই। আর পাঁচদিন পরই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়ে যাবে দুর্গাপুজো। ইতিমধ্যেই গোটা রাজ্যে সাজ সাজ রব। শহর থেকে গ্রামবাংলা দুর্গাপুজোর প্রস্তুতিতে চূড়ান্ত ব্যস্ত। একের পর এক দুর্গাপুজো উদ্বোধন করে চলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। আর দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে আজ শুক্রবার বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার পিছনে নিজের লড়াইয়ের কথা তুলে ধরলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকার এই স্বীকৃতি দিলেও সেটা যে এমনি আসেনি তা তিনি বুঝিয়ে দেন। এছাড়া আরও বেশকিছু কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

    আজ, শুক্রবার একাধিক দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেরা পুজোগুলির উদ্বোধনে এসে নানা কথা বলে ফেলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌দুর্ঘটনা অনেক সময়ে ঘটে যায়। কেউ এড়াতে পারেন না। যে কারণেই সেটা দুর্ঘটনা। তবে বাংলার মাকে অসম্মান করলে মানব না।’‌ মুখ্যমন্ত্রী যখন এই কথাগুলি বলছেন তখন দুটি বিষয় সকলের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। এক, আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনা। দুই, বাঁশদ্রোণী এলাকায় জেসিবি পিষে দেয় স্কুল পড়ুয়াকে। যা নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে যায়। এই দুটি ঘটনাই দুর্ঘটনা। তবে মুখ্যমন্ত্রী কোনটিকে বোঝালেন তা অনেকের অজানা।


    এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো, মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করা, ভুয়ো তথ্য নানা জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া নিয়েও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধীদের উদ্দেশে বার্তাও দেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‌আপনারা আমায় দেখবেন, আমার গলা শুনতে পাবেন। কিন্তু লোকটা আমি নই। এসব বেরিয়ে গিয়েছে। কাজেই এখন জগত্‍টা খুব কঠিন। সাবধানে খুব সতর্কভাবে পা ফেলতে হবে। বাংলার বদনাম তো অনেকে করে বেড়ায়। দুর্ঘটনা অনেক সময়ে ঘটে যায়, কেউ এড়াতে পারে না। দুঃখজনক ঘটনা দুঃখজনকই থাকে, সেটা কি মানুষ কখনও ভুলতে পারে? কিন্তু মনে রাখতে হবে, বাংলার মানুষকে অসম্মান করলে, আমি কখনই মেনে নেব না। আমি যতদিন বাঁচব, আমার হৃদয় যতদিন বেঁচে থাকবে, বাংলার বাইরে, বাংলাকে যারা অসম্মান করছে, তাদের বলব, শুভবুদ্ধির উদয় হোক।’‌

    অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকার বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আর সেটার জন্য তাঁকে লড়াই করতে হয়েছে। আজ আবার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। এই আন্দোলনে দু’‌জন ছাত্র প্রাণ হারান। তাই দাড়িভিটে দুটি শহিদ স্মারক তৈরি করুক রাজ্য সরকার বলে প্রস্তাব দেন তিনি। আর দুর্গাপুজো উদ্বোধন করার পর মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‌আমি খুশি যে বাংলাকে ধ্রপদী ভাষা হিসেবে কালকে প্রথম স্বীকৃতি দেওয়া হল। আমি দশ বছর ধরে লড়াই করছি। আমি দস্তা দস্তা রিসার্চ করা গবেষণাপত্র দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দিয়েছিলাম। আজ যদি তামিলনাড়ু পায়, কেরল পায়, বাংলা সারা পৃথিবীতে পঞ্চম বৃহত্তম ভাষা, এশিয়াতে দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা। তাহলে আমাদেরটা কেন ধ্রপদী ভাষার স্বীকৃতি পাবে না?‌ আমার নথিকে অস্বীকার করতে পারেনি। দীর্ঘক্ষণ বঞ্চিত থাকলেও, বাংলা তার সম্মান পেয়েছে। আমি খুশি।’‌
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)