জামালপুরে দামোদরে জালে উঠল ১ কেজিরও বেশি ওজনের ইলিশ
বর্তমান | ০৫ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: কোলাঘাট বা ফরাক্কার ইলিশের স্বাদ অনেকেই পেয়েছেন। কিন্তু, দামোদরের ইলিশের স্বাদ কেমন হয়? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া সহজ নয়। দামোদরে সমুদ্রের রুপালি ফসলের তেমন দেখা মেলে না। শুক্রবার জামালপুরের এক মৎস্যজীবী যেন অসাধ্য সাধন করেছেন। নদী থেকে জাল তুলতে গিয়ে দেখেন, একটা প্রায় এক কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের মাছ জড়িয়ে রয়েছে। ইলিশ নয় তো? প্রথম দেখায় বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। হাতে নিয়ে দেখেন এটা তো ইলিশ। ‘ইউরেকা, ইউরেকা’ আওয়াজ যেন তাঁর মুখে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল। সময় নষ্ট না করে তড়িঘড়ি চলে আসেন পাড়ে। ইলিশ ততক্ষণে ‘ভিআইপি’ হয়ে উঠেছে। চারদিকে ভিড়। কত দাম হবে তা নিয়ে শুরু হয়ে গেল চর্চা। দাম বাড়তেই থাকে। জামালপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে নিলাম করা হয়। দাম ওঠে ২১০০ টাকা।
মৎস্য আধিকারিকরা বলেন, দামোদরে সাধারণত ইলিশ মাছ দেখা যায় না। তবে এটা অস্বাভাবিকও কিছু নয়। ইলিশ নোনা জলের মাছ হলেও ডিম পাড়ার সময় মিষ্টি জলে চলে আসে। ইলিশ মাছ ঝাঁকে থাকে। দামোদরে আরও বেশি ইলিশ পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
মাছের আড়তদার জয়দেব পাঁজা বলেন, এখনও পর্যন্ত দামোদরে ইলিশ উঠতে দেখেনি। এটা বিরল ঘটনা। মৎস্য দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, আগামী দিনে আরও ইলিশ দামোদরে পাওয়া যাবে। ভালো লক্ষণ দেখা গিয়েছে। ইলিশ নোনা জলে বড় হয়। কিন্তু, ডিম পাড়ার সময় মিষ্টি জলে আসে। সেই কারণে গঙ্গা, পদ্মায় এই মাছ পাওয়া যায়। এই মাছ যত বেশি মিষ্টি জলে ঢুকবে সেটির স্বাদ তত বেশি পাওয়া যাবে। তবে দামোদরে প্রায় ২০বছর পর ইলিশ পাওয়া গেল। যার জালে মাছ পড়েছে তিনি অবশ্য কিছু বলতে চাননি। এলাকায় তাঁকে নিয়েই রীতিমতো চর্চা শুরু হয়েছে। কীভাবে এই মাছ উঠল, তা জানার উৎসাহ নিয়ে অনেকেই তাঁর কাছে যাচ্ছেন। কিন্তু, তিনি স্পিকটি নট।
মৎস্যজীবীরা বলেন, এরকম মাছ জালে একটা উঠলেই যথেষ্ট। একটা মাছের দাম অনেক বেশি পাওয়া যায়। জামালপুরে দামোদর নদে রাতেও মৎস্যজীবীরা মাছ ধরেন। কয়েক দিন আগে নদীতে জল বেড়েছিল। এখন জল কম। মাছ ধরতে আর অসুবিধা নেই। ইলিশ জালে ওঠার পর তাঁরা আরও বেশি উৎসাহ নিয়ে নদীতে যাচ্ছেন। ভোজন রসিকরাও অপেক্ষায় রয়েছেন। যদি পাতে এক পিশ এই মাছ ওঠে তাহলে আর কথাই নেই। এই স্বাদের ভাগ হবে না।