শেষবেলায় মা দুর্গার সাজ তৈরিতে তুমুল ব্যস্ততা অশোকনগরের শিল্পীদের
বর্তমান | ০৫ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: আর ক’দিন পরেই মণ্ডপে মণ্ডপে পৌঁছে যাবে দেবী দুর্গার প্রতিমা। মৃৎশিল্পীদের ঘরে এখন চূড়ান্ত ব্যস্ততা। চলছে সাজসজ্জার কাজ। কিন্তু মন ভালো নেই শিল্পীদের। কেননা বাজার ছেয়ে গিয়েছে নানা ধরনেক সাজ-সামগ্রীতে। ফলে হাতে তৈরি মা দুর্গার সাজ নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না অনেকেই। মেশিনে তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী থেকে শুরু করে মালা, মায়ের হাতের অস্ত্র, মালা, চাঁদমালা সবই বিকোচ্ছে বাজারে। এগুলির দামও কম। ফলে অনেকেই মৃৎশিল্পীদের ঘরে মাকে সাজাতে চাইছেন না। যা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে শিল্পীদের। তাও শেষবেলায় কাজের চাপ তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। দুর্গাপুজোর আর বেশিদিন বাকি নেই। ইতিমধ্যেই কুমোরপাড়ায় মৃৎশিল্পীদের কাজ প্রায় শেষের মুখে। নাওয়া খাওয়া ভুলে শেষ মুহূর্তের তুলির টান দিতে ব্যস্ত অশোকনগরের শিল্পীরা। দেবী দশভূজার হাতে আমরা দেখতে পাই নানা ধরনের অস্ত্র। বিশেষত মহালয়ার দিনেই দেবীর দশহাতে প্রদান করা হয় অস্ত্র। সেই অস্ত্র বানানো হয় অশোকনগর ২ নম্বর এলাকায়। দীপক পাল কর্মীদের নিয়ে এই কাজ করছেন জোরকদমে। তিনি তাঁর কারখানায় তৈরি করছেন চাঁদমালা, মালা ও অস্ত্র। টিন দিয়ে তৈরি হয়েছে অস্ত্র। বছরের বাকি সময় অন্যান্য জিনিস তৈরি করলেও পুজোর আগে মা দুর্গার অস্ত্র বানানোই তাঁদের মূল কাজ। প্রায় ১৮ বছর ধরে মা দুর্গা সহ অন্যান্য প্রতিমার অস্ত্র বানিয়ে চলেছেন তাঁরা। লকডাউনের সময় থেকেই বাজার মন্দা। দীপকবাবু বলেন, এ বছর একটু বাজার ভালো থাকলেও বড় অস্ত্রের তুলনায় ছোট অস্ত্রের চাহিদা বেশি। হাতে তৈরি সাজের বাজার মন্দা, মূলত বিদেশি সামগ্রী অল্প দামে বিক্রি হওয়ায়। হাতে তৈরি চাঁদমালা ১০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। অস্ত্রের সেটের দাম ৫০ থেকে ৭০০ টাকা। আর মালার দাম পড়ে ৫০-২০০ টাকা। এনিয়ে দীপকবাবু বলেন, করোনার পর আমাদের পরিস্থিতি খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তার উপর চীনে তৈরি জিনিসপত্র বাজারে চলে আসায় আমাদের জিনিসের বিক্রি একদম কমে গিয়েছে। মা দুর্গার একটি সেট তৈরি করতে আমাদের অনেকদিন সময় লেগে যায়। কিন্তু মেশিনে তা খুব কম সময়ে তৈরি করা যায়। তবে এটা ঠিক, হাতে তৈরি সাজের শৌখিনতা ও ঔজ্জ্বল্য অনেক বেশি। তাই এখনও অনেকে আমাদের কাছ থেকে মায়ে সাজ কিনে নিয়ে যান। এখান থেকে এই অসম, গুজরাত, ওড়িশা সহ একাধিক রাজ্যে দেবীর অস্ত্র, মালা, চাঁদমালা পাঠানো হয়। এবার প্রথম দিকে বাজার খুব খারাপ থাকলেও শেষের দিকে কিছুটা আশার সঞ্চার করেছে।