দুর্গাপুজো আসন্ন। শরতের সাদা মেঘের ভেলার মতো প্রবাসীদের মনেও দুর্গাপুজোর স্মৃতি জমে। দেশ থেকে হাজার মাইল দূরে মেক্সিকোতে বসেও দেশের সুখে-দুঃখে হাতে হাত মিলিয়ে পাশে থাকে। যেমন প্রবাসীরা থাকছেন কলকাতার সাম্প্রতিক আন্দোলন-সমাবেশের পাশে, খুন-ধর্ষণের বিচার চেয়ে, প্রতিবাদে সরব হয়ে।
এই বিষাদ-ভরা শরতেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি মা দুর্গাকে বরণ করে নিতে। তাঁর কাছেই প্রার্থনা করব, অশুভ শক্তির বিনাশ করতে। মেক্সিকোর কেরেতারো শহরে এই একটিই পুজো— 'কেরেতারো সার্বজনীন দুর্গোৎসব'। এই পুজোর বৈশিষ্ট্য প্রতিমা তৈরি থেকে শুরু করে মণ্ডপসজ্জা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং খাবার নিজেরাই তৈরি করে থাকেন। এ বার পুজো হবে দু'দিনব্যাপী।
খড়ের অপ্রতুলতায় কাঠ এবং কার্ডবোর্ড দিয়ে কাঠামো এবং মাটি দিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। মেক্সিকোতে মা দুর্গা সেজে উঠবেন চিরপরিচিত ডাকের সাজে। ভারত এবং মেক্সিকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ফুটে উঠবে সাজসজ্জায়। পুজো হবে বাঙালির সমস্ত নিয়ম মেনে।
দু’দিন ব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষেরা। মেক্সিকানরাও এতে যোগ দেন স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে। অফিস শেষে প্রতিদিন চলছে নাচ, গান এবং নাটকের মহড়া। এ ছাড়া থাকছে ছোটদের আঁকা প্রতিযোগিতা। শাড়িতে, ধুতিতে বাঙালিয়ানা সাজের জন্যও থাকবে বিশেষ পুরস্কার। পুজোর ভোগে থাকবে লুচি, তরকারি, খিচুড়ি, মিষ্টি-সহ নানা বিধ খাবার। এ ছাড়া, পুজো প্রাঙ্গণে নানাবিধ খাবারের স্টলও থাকবে।
শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত মেক্সিকোর প্রবাসী বাঙালিরা। দেশ , পরিবার থেকে দূরে থেকেও, বাঙালির প্রাণের উৎসবে শামিল হতে উৎসুক সবাই। সবাই মিলে প্রাণভরে প্রার্থনা করব মায়ের কাছে, সুদূর কলকাতায় মেয়ে-হারানো মা যেন বিচার পান।