• প্রতিবেশীকে 'যৌন অপরাধে' টাইট দিতে নাবালিকা কন্যাকেই টোপ, এ কেমন মা-বাবা!
    ২৪ ঘন্টা | ০৫ অক্টোবর ২০২৪
  • কিরণ মান্না: প্রতিবেশীকে ভালো রকম টাইট দিতে নিজের নাবালিকা মেয়েকে হাতিয়ার করেছিল বাবা-মা। মেয়ের উপর যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তুলে নাবালিকার বাবা-মা পকসো আইনে মামলা রুজু করেছিল প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। পকসো আইনে সেই মামলা মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ায় পাল্টা অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করার নির্দেশ দিলেন কাঁথি পকসো-আদালতের বিচারক অজয়েন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য। নজিরবিহীন ওই রায়ে যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে। এবার থেকে মিথ্যে মামলাকারীরা দশবার ভাববেন কাউকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসাতে। এমনটা মনে করছেন কাঁথি আদালতের আইনজীবীরা।

    আসামীর বদলে সাজা হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা অভিযোগকারীর। অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেই আইনি পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিলেন বিচারক। শুধু তাই নয় অভিযোগকারী-সহ তার স্বামীর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঘটনার সূত্রপাত ২০১৮ সালের জুলাই মাসের ২৫ তারিখ। দীঘা মোহনা থানার অধীনে এই মামলার অভিযোগকারী গজ মোহন দাসের স্ত্রী একটি অভিযোগ দায়ের করে জানান তার নাবালিকা কন্যা রাত্রিতে ঘর লাগোয়া বাথরুমে গিয়েছিল। স্বপনদা তার মেয়েকে যৌন নিগ্রহ করে। নাবালিকার মা পরে প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তরা মারধর করে বলে অভিযোগ। এনিয়ে দীঘা মোহনা থানা মামলা শুরু করে। তদন্ত শেষে চার্জশিট জমা দেয় পুলিস।

    চার্জশিটে পকসো ধারায় অভিযোগের পাশাপাশি মারধরেরও অভিযোগ ছিল। বিচারের জন্য মোকদ্দমা যায় বিশেষ পকসো আদালতে। বিচার চলাকালীন ৫ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন। সাক্ষ্যদানের সময় দেখা যায় অভিযোগকারীর সমস্ত অভিযোগই ভিত্তিহীন এবং অভিযুক্তদের সঙ্গে অভিযোগকারীর পুরানো বিবাদকে কেন্দ্র করে এই মামলা উৎপত্তি। এতেই বিচারক অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি তার রায়ে উল্লেখ করেন পকসো আইন শিশুদের সুরক্ষার জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে। সেই আইনকে হাতিয়ার করে যে কোন ব্যক্তিকে অপরাধী বানানো অপরাধের শামিল।

    অভিযোগকারী মহিলা, তার  স্বামী এবং কন্যার বিরুদ্ধে মিথ্যে সাক্ষী দান এবং আইনি অপব্যবহারের জন্য তিনজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দেন। তিনি আরও বলেন, এই ধরনের মিথ্যা মামলা সমাজের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। কাঁথি আদালতে পকসো মামলায় এ ধরনের রায় দান এই প্রথম। কাঁথি আদালতের সরকার পক্ষের আইনজীবী আনন্দ দাস জানিয়েছেন আইনের অপব্যবহার চরম সীমায় পৌঁছানোর আগে আজকের এই রায় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবী মহল বলছেন আজকের এই রায় ঘোষণার পরে যারা মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে নাবালিকাকে শিখন্ডি করে পকসো মামলা রুজু করার কথা ভাবছেন বা ভেবেছেন তারা নিশ্চয়ই সতর্ক হবেন। এই রায় আইনজীবী এবং পুলিশ মহলে শোরগোল ফেলেছে।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)