দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় রণক্ষেত্র জয়নগর। শনিবার সকালে অবস্থান বিক্ষোভ তুলতে গিয়ে প্রহৃত হন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক গণেশচন্দ্র মণ্ডল। দুপুরে দিকে পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে যান সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল। তাঁকেও শুনতে হয় ‘গো ব্যাক’ স্লোগান। দেখানো হয় জুতোও। এমনকী, বামনেত্রী কণীনিকা ঘোষ বোস ও মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কেও ফিরে যেতে বলে উন্মত্ত জনতা। ঘটনাস্থলে রয়েছেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল।
জয়নগরের মহিষমারির কৃপাখালির বাসিন্দা চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়ার নিথর দেহ জলাজমি থেকে উদ্ধার হয়। সেই সময় তার দেহে একাধিক ক্ষতচিহ্ন পাওয়া যায় বলেই অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে ওই ছাত্রীকে। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন উত্তেজিত স্থানীয়রা। ঝাঁটা হাতে পুলিশকে ধাওয়া করেন মহিলারা। একপ্রস্থ ঝাঁটাপেটাও করা হয়। বারুইপুরের এসডিপিও-কে লাঠি হাতে ধাওয়া করেন মহিলারা। জয়নগরের মহিষমারি ফাঁড়িতেও চলে ব্যাপক ভাঙচুর। ফাঁড়িতে আগুনও লাগিয়ে দেন স্থানীয়রা। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন এলাকাবাসী। রাস্তায় জায়গায় জায়গায় বাঁশ ফেলে অবরোধ শুরু করেন স্থানীয়রা।
এই বিক্ষোভকারীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল বিধায়ক গণেশচন্দ্র মণ্ডল। সেইসময় তাঁকে ঘিরে ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা মারধর করে বলে দাবি। সেই সময় সেখান থেকে চলে যান বিধায়ক। দেহ উদ্ধার করে পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেও আমজনতা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল সেখানে হাজির হন। কিন্তু তাঁকেও রীতিমতো জুতো দেখানো হয়। গো ব্যাক স্লোগানও ওঠে। সেই সময় সেখানে পৌঁছন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল। দুজনই কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন। আঙুল উঁচিয়ে অগ্নিমিত্রা প্রশ্ন করেন, “পুলিশ কেন নিষ্ক্রিয়? আপনাকে জবাব দিতে হবে।” হাত জোর করে বোঝানোর চেষ্টা করেন সাংসদ। কিন্তু হয়নি। বিজেপি নেত্রী উত্তেজিতভাবে প্রশ্ন করে যাচ্ছিলেন। উত্তপ্ত জনতাও তাঁকে গো ব্যাক স্লোগান দিতে থাকে। মীনাক্ষী-কণীনিকাও বিক্ষোভ দেখান। তাঁদেরকে ঘিরেও পালটা বিক্ষোভ হয়। তাঁদের হাসপাতালে ঢোকার অনুমতি দেয় পুলিশ। ঘটনাস্থলে যান কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ও। স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।