জয়নগর-কাণ্ড: অভিযুক্তের পক্ষে দাঁড়ালেন না কোনও আইনজীবী! পুলিশের আবেদন মেনে নিলেন বিচারক
আনন্দবাজার | ০৫ অক্টোবর ২০২৪
জয়নগরের ঘটনায় অভিযুক্তকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। শনিবার ভোরে তাঁকে গ্রেফতার করে বারুইপুর থানার পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে খুন, তথ্যপ্রমাণ লোপাট, অপহরণ-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকার পক্ষের আইনজীবী সামিউল হক। তবে এখনও পর্যন্ত ধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়নি। সূত্রের খবর, ধর্ষণের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই বিষয়টা স্পষ্ট হবে।
শনিবার দুপুরেই অভিযুক্ত যুবককে বারুইপুর আদালতে হাজির করানো হয়। তবে তাঁর পক্ষে কোনও আইনজীবী সওয়াল করেননি। পুলিশের তরফে সাত দিনের হেফাজত চাওয়া হয়েছিল। সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারক।
জয়নগরের মহিষমারি এলাকায় একটি জলাভূমি থেকে শুক্রবার রাতে উদ্ধার করা হয় এক ন’বছরের শিশুর দেহ। অভিযোগ, তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। রাতেই সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করে পুলিশ। ১৯ বছরের যুবককে গ্রেফতার করা হয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত এলাকা। থানায় ঢুকে ভাঙচুর চালানো হয়। মহিষমারির পুলিশ ক্যাম্পে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় র্যাফ।
পরিবার পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে। অভিযোগ, তাদের কথায় প্রথমে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাদের বলা হয়েছিল, জয়নগর থানায় অভিযোগ জানাতে হবে। পরিবারের দাবি, অভিযোগের কথা শুনেই পুলিশ তৎপর হলে শিশুটিকে হয়তো বাঁচানো যেত। শনিবার এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে জয়নগরে পৌঁছন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতিম সরকার, প্রেসিডেন্সি রেঞ্জের ডিআইজি আকাশ মাঘারিয়া-সহ একাধিক পুলিশকর্তা। পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেলেও এলাকায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ সম্পর্কে বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি জানান, মহিষমারি পুলিশ ক্যাম্পে রাত ৯টা নাগাদ খবর পৌঁছয়। সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত শুরু হয়। কোথা থেকে শিশুটি নিখোঁজ হয়েছিল, কে শেষ বার তাকে দেখেছিল, এই তথ্যগুলি সংগ্রহ করা হয়েছিল তখনই। সাধারণত কোনও শিশু নিখোঁজ হলে অপহরণের মামলা রুজু করা হয়। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল। রাতে অভিযুক্তকে চিহ্নিতও করা হয়। জয়নগর থানায় সাড়ে ১২টা নাগাদ মামলা রুজু হয়েছে। তিন-চার ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে। খুনের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি, এমনই জানান বারুইপুরের এসপি।