অর্ণব আইচ: কেউ বিচারাধীন বন্দি, কেউ বা সাজাপ্রাপ্ত। সকলের ঠিকানা সংশোধনাগার। কখনও কোনও না কোনও অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে গরাদের পিছনে দিন কাটাচ্ছে তারা। কারও আবার বিচার চলছে। সেই সময়টুকু ঠাঁই নিতে হয়েছে জেলে। এমন অন্ধকার জীবনেও তো উৎসবের আলো আসে। উঁচু, মোটা প্রাচীর ভেদ করে জানান দেয় আগমনি। দুর্গাপুজোর চারটে দিন তাদেরও অধিকার রয়েছে একটু ভালোভাবে কাটানোর। আর তাই নিজেরাই আয়ের টাকার একাংশ জেল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন তাঁরা। সেই টাকায় চলে ভালো-মন্দ খাওয়াদাওয়া। তবে এবছর রাজ্যের সংশোধনাগারগুলিতে একেবারে স্পেশাল মেনু থাকছে। বাঙালির প্রিয় পদগুলির পাশাপাশি বিরিয়ানি, পোলাও-ও পড়বে তাঁদের পাতে।
জানা গিয়েছে, এবছর রাজ্যের কারাগারগুলিতে ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত বিশেষ রান্না হবে। রোজকার মেনু আমূল বদলে যাবে পুজোর(Durga Puja 2024) এই কটা দিন। এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, ”জেলবন্দিরা এবার অনুরোধ করেছেন উৎসবের কয়েকটা দিন দুপুর আর রাতের খাবারে যদি বদল আনা যায়। সেজন্য আমরা এবার নতুন মেনু ঠিক করেছি। আমার মনে হয় ওদের এই উদ্যোগ সংশোধনের জন্য জরুরি। উৎসবে এভাবে তাদের শামিল করে মুখে হাসি আনতে চাই আমরাও।” সেইমতো একেকদিনের জন্য একেক রকম মেনু ঠিক করা হয়েছে। পাচককে বলেও দেওয়া হয়েছে।
কী কী খাওয়া হবে পুজোর দিনগুলোয়? এই প্রশ্নের চেয়ে সহজ কী বাদ যাবে, তার জবাব দেওয়া। শোনা যাচ্ছে, মাছের মাথা দিয়ে ডাল, মাছের মাথা দিয়ে পুঁইশাক থেকে শুরু করে আলু-পটল চিংড়ি, কষা মাংস, মটন বিরিয়ানি, বাসন্তী পোলাও ? সব থাকছে। এমনকী প্রাতরাশের জন্য লুচি-তরকারিও থাকবে জেলবন্দিদের পাতে। কারণ, মাছ-মাংস ছাড়া তো বাঙালির সেরা উৎসবের আনন্দ অপূর্ণ থাকে। তবে এই দিনগুলোয় নিরামিষাশীদের জন্যও আলাদা পদের ব্যবস্থা থাকবে বলে সংশোধনাগার সূত্রে খবর।
এবছর প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি বেশ কয়েকজন ভিআইপি। প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ছাড়াও আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ রয়েছেন সংশোধনাগারে। জেলবন্দিদের উদ্যোগ আর কর্তৃপক্ষের অনুমোদনে পুজোর কটা দিন তারাও ভালো খাওয়াদাওয়া করতে পারবেন। এই মুহূর্তে রাজ্যের সংশোধনাগারে প্রায় ২৭ হাজার পুরুষ এবং ১৮০০ মহিলা বন্দি রয়েছেন।