• সরকারি হাসপাতালে সম্পূর্ণ নিখরচায় জন্ম হল টেস্ট টিউব বেবির, নজির গড়ল এসএসকেএম
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৬ অক্টোবর ২০২৪
  • এক অসামান্য সাফল্য ও মানবিকতার নজির গড়ল শহর কলকাতারই এক সরকারি হাসপাতাল। এই প্রথমবার সম্পূর্ণ বিনামূল্যে জন্ম হল এক টেস্ট টিউব বেবির।

    উল্লেখ্য, বেসরকারি হাসপাতালে টেস্ট টিউব বেবির জন্ম আজকালকার দিনে নতুন কিছু নয়। কিন্তু, তার জন্য় লক্ষ-লক্ষ টাকা খরচ করতে হয়। সেখানে শুক্রবার এসএসকেএম হাসপাতালে ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে যে শিশুর জন্ম হয়েছে, তার জন্য প্রসূতির পরিবারকে এক টাকাও খরচ করতে হয়নি।

    সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, জন্মের পর থেকে সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে সদ্যোজাত। তার ওজন প্রায় ৩ কিলোগ্রাম। সুস্থ রয়েছেন প্রসূতিও। তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বাসিন্দা।

    প্রসঙ্গত, ভারতে আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে মানব শিশুর জন্ম দেওয়ার প্রযুক্তির প্রবর্তন ঘটিয়েছিলেন করেছিুলেন ডা. সুভাষ মুখোপাধ্য়ায়। প্রয়াত ডা. মুখোপাধ্যায়ের অন্যতম সহযোগী ছিলেন ডা. সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার।

    শুক্রবার এসএসকেএম-এ যে টেস্ট টিউব বেবির জন্ম হয়েছে, তার নেপথ্যে মূল দায়িত্ব ছিল এই ডা. সুদর্শন ঘোষ দস্তিদারেরই উপর। সেই দায়িত্ব তাঁকে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    তথ্য বলছে, আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তানের জন্ম দিতে গেলে মোট ছ'টি পর্যায় বা ধাপের মধ্যে দিয়ে এগোতে হয়। প্রত্য়েকটি ধাপের জন্য খরচ পড়ে দেড় থেকে দু'লক্ষ টাকা। কোনও দরিদ্র পরিবারের পক্ষে সেই খরচ বহন করা কার্যত অসম্ভব।

    এই প্রেক্ষাপটে আড়াই বছর আগে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে টেস্ট টিউব বেবি সেন্টার চালু হয় ৷ এই সেন্টারের অধীনে ৩৬টি আইভিএফ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছিল। যা সফল হলে মোট ৩৬টি শিশুর জন্ম হবে। সেই প্রক্রিয়ারই অন্তর্গত প্রথম মানব শিশুর জন্ম হল শুক্রবার।

    রাজ্যে এই প্রথম কোনও সরকারি হাসপাতালে এবং সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই প্রক্রিয়া সারা হল। যা সারা দেশেও এক বিরলতম ঘটনা।

    এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর, সেখানে অত্যাধুনিক এই পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। শুক্রবার হাসপাতালে প্রথম টেস্ট টিউব বেবির জন্মের পর একটা পরিষ্কার যে প্রাথমিকভাবে এই উদ্যোগ সফল হয়েছে।

    উল্লেখ্য, আইভিএফ পদ্ধতি খরচ সাপেক্ষ হওয়া সত্ত্বেও ১০০ শতাংশ সাফল্যের নিশ্চয়তা নেই। সেখানে এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকরা যে নয়া ইতিহাস গড়লেন, নিঃসন্দেহে একথা বলাই যায়। স্বাভাবিকভাবেই এই সাফল্যে খুশি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।

    একইসঙ্গে খুশি ওই শিশুর পরিবারও। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, শুক্রবার একটি শিশুর জন্ম এক দম্পতি এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জীবন নতুন করে আনন্দে ভরিয়ে দিয়েছে। চিকিৎসকদের আশা, আগামী দিনে এভাবেই আরও অনেক গরিব পরিবারে জন্ম হবে অসংখ্য টেস্ট টিউব বেবির, তাও সম্পূর্ণ নিখরচায়।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)