নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: সকাল থেকেই শরতের রোদ ঝলমলে আকাশ। মুর্শিদাবাদ জেলাজুড়ে পুজোর আগে শেষ শনিবারের বাজারে জমজমাট ভিড়। সকাল থেকে বহরমপুরে উৎসাহীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে কেনাকাটা শুরু করেন। সব থেকে বেশি ভিড় ছিল প্রসাধনী দ্রব্যের দোকানে। একটি নামী ব্র্যান্ডের জুতোর দোকানে লাইন দিয়ে জুতো কিনতে দেখা যায় উৎসবপ্রিয় জনতাকে। খাগড়া, নতুনবাজার ও লালদিঘির জামাকাপড়ের দোকান এবং শপিংমলে ছিল কালো মাথার ভিড়। বেলা বাড়তেই দফায় দফায় যানজট হয় খাগড়া ও নতুনবাজার এলাকায়। টোটো, বাইক, ছোট চারচাকা গাড়ির ভিড় সামাল দিতে গোটা রাস্তায় অতিরিক্ত পুলিস মোতায়ন করা হয়। তীব্র গরমে নাজেহাল হলেও কেনাকাটার উৎসাহে একটু ভাটা পড়েনি আমজনতার। কেনাকাটার মাঝখানে শরবত ও লস্যিতে গলা ভিজিয়ে নিতে দেখা গেল অনেককেই। সন্ধ্যার সময় কয়েক পশলা বৃষ্টিতে সাময়িক ব্যাঘাত ঘটে কেনাকাটায়। হাতে সময় কম, তাই বিরক্তি হলেও কেনাকাটার ময়দানকে সেভাবে কেউ ওয়াকওভার দেননি।
মা বাবার হাত ধরে ছোট্ট অঙ্কিতা কল্পনা হাউসের মোড়ে সাজসজ্জার জিনিস কিনছিল। মটকা কুলফির দোকান দেখে সে চিৎকার করে ওঠে, বাবা কুলফি খাব। রাস্তার ধার থেকে কুলফি কিনে মেয়েকে শান্ত করেন রঞ্জিতবাবু। ছুটির দিনে বেলডাঙা থেকে বহরমপুরে এসে সকাল সকাল সপরিবারে বেরিয়ে পড়েছেন বাজার করতে। রঞ্জিত দাস বলেন, গতকালই অফিসে ছুটি হয়েছে। পরিবারকে বলে রেখেছিলাম, শনি ও রবিবার বাজার করব। তাই প্রথম দিনই বহরমপুর এসেছি। শপিংমল এবং বড় দোকানগুলি থেকে জিনিসপত্র দেখে কিনব। তাই সকাল সকাল বাজারে এসেছি। যেটুকু কেনা বাকি থাকবে, সেটা কালকে চেষ্টা করব শেষ করার। হাতে সময় খুব কম। রবিবার বাজারে খুব ভিড় হবে, তাই আজই অধিকাংশ বাজারটা করে রাখার চেষ্টা করছি। বহরমপুরের খাগড়ার একটি বিখ্যাত ব্যান্ডের জুতোর দোকানে ভিড় ঠেলে জুতো কিনতে ঢুকছিলেন শ্রাবণী রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, আমি পুজোর কেনাকাটা করতে আসিনি। পুজোর সময় জুতো কেনা হয় না। পুজোর পরেই বেড়াতে যাব। তাই চামড়ার একটা স্যান্ডেল কিনতে হবে বলে এসেছি। কিন্তু ভিড়ের চোটে দোকানে ঢুকতেই পারছি না।
বিভিন্ন শপিং মলে আকর্ষণীয় অফার মাইকে প্রচার করা হয়। উপহারের লোভে সেখানে কেনাকাটা করতে ঢোকেন অনেকেই। সৈদাবাদের বাসিন্দা অর্ণব সামন্ত বলেন, দু’দিন আগেই মাইনে পেয়েছি। কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে বাজার করতে এসেছি। জিন্স টি-শার্ট কিনেছি। কিছু ফরমাল শার্টের খোঁজ করছি। পুজোর ফ্যাশনের পোশাকের সঙ্গে ঘরে পড়ার প্যান্ট গেঞ্জিও দেখছি। বহরমপুরের নতুন বাজারের বস্ত্র ব্যবসায়ী অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, শনি রবিবার শেষ পুজোর বাজারে ভালোই ভিড়ের আশা করছি। বড় দোকানগুলিতে অনেক আগে থেকে ভিড় হচ্ছে। ছোট দোকানে সবে ক্রেতারা আসছে। বন্যা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে যেভাবে মানুষ বাজারমুখী হয়েছে, তাতে আমরা কিছুটা আশাবাদী। -নিজস্ব চিত্র