• মিলেছে বরাত, পুজো আসতেই মুখে হাসি ঝাড়গ্ৰামের ঢাকিদের
    বর্তমান | ০৬ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্ৰামের বেশিরভাগ ঢাকি বংশ পরম্পরায় ঢাক বাজান। সারাবছর ধরে ছোটখাটো পুজোর বায়ানা মেলে। সত্যাডিহি গ্ৰামের ঢাকিরা অবশ্য দুর্গাপুজোর দিকে তাকিয়ে থাকেন। আশ্বীন মাস আসলেই গ্ৰামের ঢাকিদের তোরজোড় শুরু হয়ে যায়। পুজো উদ্যোক্তরা গ্ৰামে এসে বা ফোনে বায়না করেন। ঢাকিদের ঢাক সারানো, ঢাকের বোলের চর্চা সেরে ফেলতে হয়। প্রতিবারের মতো এবারও গ্ৰামের ঢাকিরা জেলা শহর থেকে দূরের শহরে ঢাক নিয়ে পাড়ি দেবে। পুজোর মণ্ডপে মণ্ডপে ঢাকের বোল তুলবে। ঝাড়গ্রাম শহর থেকে পাঁচ-ছয় কিমি দূরে সত্যাডিহি গ্ৰাম। গ্ৰামের ঢাকি শিল্পীরা বংশপরম্পরায় ঢাক বাজিয়ে আসছেন। আশ্বীন মাস আসতেই গ্ৰামের ঢাকা পাড়ায় ব্যাস্ততা বেড়েছে। গ্ৰামের পাড়ায় পাড়ায় ঢাকের বোল চর্চার অনুশীলন শুরু হয়ে গিয়েছে। গ্ৰামের চল্লিশ ঘরের ঢাকিরা এবার কেউ জেলা শহর, কেউ কলকাতা, কেউ আবার ঢাক নিয়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেবেন। গ্ৰামের ঢাকি সুভাষ মিদ্দা বলেন, বংশপরম্পরায় আমরা ঢাকা বাজিয়ে আসছি। সারাবছর ধরে আশপাশের গ্ৰামীণ এলাকায় ছোটখাটো নানা ধরনের পুজো হয়। সেখানে ঢাক বাজিয়ে কিছু রোজগার হয়। তবে দুর্গাপুজোর জন্য আমরা অপেক্ষা করে থাকি। আশ্বীন মাস এলেই শহরের বড় বড় পুজো মণ্ডপে ঢাক বাজাতে যাওয়া নিয়ে তোরজোড় শুরু হয়ে যায়। বাপ ঠাকুরদা জয়ঢাক, বীরঢাকে বোল তুলতো। এখন আমরা সুবিধার জন্য ফাইবারের ঢাক বাজাই। বয়ে নিয়ে যেতে সুবিধা হয়। তবে দেবীর উদ্দেশ্য পূর্বপুরুষরা যে বোল তুলতেন তার কোনও বদল হয়নি। জ্যোৎস্না মিদ্দা বলেন, আগে পুরুষেরা ঢাক বাজিয়ে যে টাকা নিয়ে আসতো। তারজন্য আমাদের অপেক্ষা করে থাকতে হতো। এখন লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে হাজার টাকা করে পাই। পুজোর সময় সেই টাকা দিয়ে ছেলেমেয়েদের নতুন জামাকাপড় কিনি। ওষুধ কিনতেও এই টাকা খুব কাজে লাগে। গ্ৰামের আর এক ঢাকি শিল্পী দুলু মিদ্দা বলেন, ঢাকা বাজানো আমাদের শুধু পেশা নয়, নেশাও বটে। আশ্বীন মাস এলেই বুঝতে পারি মনে দোলা লেগেছে। ঢাকগুলি নামিয়ে সাফ করি। বোল ঠিকঠাক না হলে ঠিক করতে হয়। পুজো উদ্যোক্তারা বায়না করতেও গ্ৰামে আসা শুরু করেছে। লালগড়ের এক পুজো কমিটি বায়না করে গেছে।  
  • Link to this news (বর্তমান)