ব্রতীন দাস, লাটাগুড়ি: পুজোয় জঙ্গল ভ্রমণ। বনাঞ্চলেই খাওয়াদাওয়া। তাও আবার বনবস্তিবাসীর হাতে তৈরি ‘লোকাল ফুড’। বন্যপ্রাণীদের সঙ্গে লুকোচুরি। হাতছানি দিচ্ছে গোরুমারা জাতীয় উদ্যান। সদ্য বৃষ্টিভেজা গভীর জঙ্গলে সবুজের সমারোহ। আদিম পরিবেশের ছোঁয়া। গাছগাছড়ার বুনো গন্ধে মিশে থাকা রহস্য রোমাঞ্চের হাতছানি। তারই সঙ্গে হাতি সাফারির বাড়তি ব্যবস্থা। মোষের গাড়িতে গণ্ডার দর্শন। প্রজাপতি পার্কে অনাবিল আনন্দে ভেসে যাওয়া। এরই মাঝে জঙ্গলেই অষ্টমীতে মা দুর্গার সামনে অঞ্জলি। একসঙ্গে বসে খাওয়া খিচুড়ি ভোগ। মেতে ওঠা আদিবাসী লোকসংস্কৃতি উৎসবে।
এতদিন গোরুমারায় পর্যটকদের পিঠে চাপিয়ে জঙ্গল ঘোরানোর জন্য ছিল জেনি ও মাধুরী। পুজোয় ট্যুরিস্টদের চাপ সামলাতে তাদের সঙ্গ দিতে তৈরি ডায়না ও ফুলমতি। কলকাতা সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে যাঁরা পুজোর ছুটিতে ডুয়ার্সের গোরুমারায় বেড়াতে আসছেন, ধূপঝোরা থেকে এই চার কুনকির পিঠে চড়ে তাঁরা উপভোগ করতে পারবেন জঙ্গলের সৌন্দর্য। সঙ্গে বন্যপ্রাণী দর্শন। বাড়তি ব্যবস্থায় এখন দিনে বারোর বদলে ২৪ জন হাতি সাফারি করতে পারবেন। রামসাইয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে ছ’টি মোষের গাড়ি। এতে করেই নিয়ে যাওয়া হবে মেদলা নজরমিনার পর্যন্ত। বহুদিন বন্ধ থাকার পর পর্যটকদের জন্য সেজে উঠেছে রামসাইয়ের প্রজাপতি পার্ক। এবার পুজোয় গোরুমারায় বনবাংলোগুলিতে রাত্রিবাসের সুযোগ পাচ্ছেন না পর্যটকরা। ধূপঝোরা, মৌচুকি, কালীপুর, পানঝোরা, মূর্তি, হর্নবিল ও রাইনো ক্যাম্প, সাত সাতটি বনবাংলো এখানে। হলং বনবাংলো পুড়ে যাওয়ার পর এগুলির সুরক্ষায় বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। চলছে সংস্কার কাজ।
গোরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের সহকারী বনাধিকারিক রাজীব দে বলেন, আগে এখানে সাফারির জন্য দু’টি কুনকি ছিল। পুজোর মরশুমে পর্যটকদের বাড়তি চাপের কথা মাথা রেখে আরও দু’টি কুনকিকে সাফারির জন্য রাখা হয়েছে।
তবে গোরুমারায় বিদেশি পর্যটকদের দেখা মিলছে না। এনিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন জলপাইগুড়ির ডিএফও (টেরিটোরিয়াল) বিকাশ ভি। তিনি বলেন, গোরুমারায় অনেক পর্যটক আসছেন। কিন্তু সেভাবে বিদেশিদের দেখা মিলছে না। গোরুমারাকে যাতে আরও ভালোভাবে তুলে ধরা যায়, তার চেষ্টা করতে হবে। সহকারী বনাধিকারিক রাজীব দে অবশ্য মনে করেন, বিদেশি পর্যটকরা মূলত শীতের মরশুমে বেড়াতে আসেন। অক্টোবরের শেষ থেকেই গোরুমারায় তাঁদের দেখা মিলতে শুরু করবে।