• বলরামপুরে গণ ইস্তফার নেপথ্যে দলবদলু ‘বিভীষণ’কেই দায়ী করছে তৃণমূল নেতৃত্ব
    বর্তমান | ০৬ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: ফরওয়ার্ড ব্লকের হাত ধরে রাজনৈতিক জীবনে হাতেখড়ি। তারপর কংগ্রেসের ‘হাত’ ধরে বলরামপুরের ব্লক সভাপতি হন। যদিও কংগ্রেসের ‘বাজার’ খারাপ হতেই পালাবদলের আগে তৃণমূলে যোগ দেন। মোদি হওয়া উঠতেই আবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে। বিজেপির বলরামপুর মণ্ডলের সভাপতি হন। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সেই সুভাষ দাসকে বলরামপুর বিধানসভা থেকে প্রার্থীও করে বিজেপি। যদিও হেরে যান তৃণমূলের পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ শান্তিরাম মাহাতর কাছে। একুশের বিধানসভার পর ফের তৃণমূলে ঘরওয়াপসি হয় সুভাষের। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে পঞ্চায়েত সমিতির আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। জয়ী হয়ে পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষও হন। তিনিই দলকে যেভাবে অস্বস্তিতে ফেললেন, তাঁকে ‘বিভীষণ’ বলে দাগিয়ে দিতে শুরু করেছে দলের একাংশ! যদিও অনেকের কাছে আবার তিনি প্রতিবাদী চরিত্র। 


    গত শুক্রবার বলরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির ১২জন সদস্য এসডিওর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। অভিযোগ, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সদস্যদের নেতৃত্ব দেন সুভাষবাবু। তাঁদের আগলে রাখেন। তাঁর অভিযোগ মূলত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কাল্লাবতী কুমার ও বিডিওর বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে পঞ্চায়েত সমিতিতে কার্যত একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন সভাপতি। বিডিওকে হাত করে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করছেন।’ তবে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া নিয়ে সুভাষবাবুর উপর বেজায় ক্ষুব্ধ দল। বিষয়টি কানে গিয়েছে রাজ্য নেতৃত্বেরও। দলকে এভাবে অস্বস্তিতে ফেলার ঘটনাকে মোটেই সমর্থন করছে না। জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, ক্ষোভ থাকলে তা দলীয় ফোরামে জানানো উচিত। এই বার্তা বরাবর দিয়ে থাকেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, দলকে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে এরককম ঘটনা কাম্য নয়। বলরামপুরে তৃণমূলের নেতাদের একাংশের কথায়, সুভাষ দাস বরাবরই ‘সুবিধাবাদী’ রাজনীতি করেই এসেছেন। তিনি যে যেকোনও মুহূর্তে দলকে অস্বস্তিতে ফেলতে পারেন, তা কি নেতৃত্ব জানত না? তবে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ আবার সুভাষবাবুর এই পদক্ষেপকে সমর্থন করছে। তাদের দাবি, পঞ্চায়েত সমিতিতে যেভাবে লুটতরাজ চলছে, উনি তার বিরোধিতা করেছেন। যাঁকে নিয়ে এত বিতর্ক সেই সুভাষবাবু বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বারংবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কথা বলেন। আমি তাই করেছি। তাতে যে যা খুশি ভাবতে পারেন। বিজেপির মণ্ডল সভাপতি আদিত্য মাহাত বলেন, টাকা পয়সার ভাগ বাটোয়ারা নিয়েই প্রধান ঝামেলা। যারা ভাগ পাচ্ছেন না, তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)