চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে অপহরণ করে খুন, পুলিস ফাঁড়িতে ভাঙচুর-আগুন, ধৃত অভিযুক্ত, উত্তপ্ত জয়নগর
বর্তমান | ০৬ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও সংবাদদাতা, বারুইপুর: টিউশন সেরে ফেরার পথে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে অপহরণ করে খুন। শুক্রবার রাতের এই ঘটনায় শনিবার সকাল থেকে জনবিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠল জয়নরের মহিষমারি হাট এবং লাগোয়া কুলতলি থানার কৃপাখালির হালদারপাড়া মোড় এলাকা। পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে মূল অভিযুক্ত মোস্তাকিন সর্দার নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হলেও, পুলিসের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে মারমুখী হয়ে ওঠে জনতা। ব্যাপক ভাঙচুর করে আগুন লাগানো হয় মহিষমারি পুলিস ক্যাম্পে। হেনস্তা করা হয় পুলিসকর্মীদের। চলে ইটবৃষ্টিও। এই ঘটনায় জখম হয়েছেন ১২ পুলিসকর্মী। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে লাঠিচার্জ, পরে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে হয় পুলিসকে।
মৃতার বাবা জানিয়েছেন, টিউশন যাওয়ার জন্য শুক্রবার দুপুর ২টো নাগাদ মেয়ে তাঁর সঙ্গেই মহিষমারিতে আসে। বাড়ি ফেরার পথে ৫টা নাগাদ দোকানে দেখা করে। কিন্তু রাতে বাড়ি ফিরে তিনি জানতে পারেন, মেয়ে তখনও ফেরেনি। এরপরই শুরু হয় খোঁজ। এক বান্ধবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, স্থানীয় এক যুবকের সাইকেলে চেপে ছাত্রীকে যেতে দেখা গিয়েছে। নাম মোস্তাকিন সর্দার। ওই যুবককে জেরা করে পুলিস গভীর রাতে দেহ উদ্ধার করে ছাত্রীর বাড়িরই ১০০ মিটার দূরে একটি পুকুর থেকে। গ্রেপ্তার করা হয় মোস্তাকিনকে।
ছাত্রীর বাবা ও গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তাকে। আর গ্রামীণ এলাকার এই ঘটনার সঙ্গে আর জি কর পর্বকে সম্পৃত্ত করে শনিবার আসরে নেমে পড়ে রাম-বাম দু’পক্ষই। বারুইপুর পুলিস জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি বলেন, কোনও গাফিলতি হয়নি। সময়মতো অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। ছাত্রীর বাবা শুক্রবার রাত ৯টায় ফাঁড়িতে মিসিং ডায়েরি করেন। রাত সাড়ে ১২টায় জয়নগর থানায় অপহরণের অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়। অভিযুক্তের বয়ানের ভিত্তিতে রাতেই ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। যৌন নির্যাতনের কোনও চিহ্ন মেলেনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছি।
এদিন জয়নগর পদ্মেরহাট গ্রামীণ হাসপাতালে প্রথমে রাখা হয়েছিল ছাত্রীর দেহ। পরে কড়া পুলিস পাহারায় মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মোমিনপুরের কাঁটাপুকুর পুলিস মর্গে। সংরক্ষণ করা হয়েছে মৃতদেহ। পুলিস জানিয়েছে মৃতার বাবা তথা পরিবার যেখানে চাইবেন, সেখানেই ময়নাতদন্ত করার ব্যবস্থা করা হবে। সূত্রের খবর, রাতে ছাত্রীর পরিবারের তরফে রাজ্য পুলিসের ডিজি, জয়নগর ও সাউথ পোর্ট থানায় চিঠি লিখে জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকারের কোনও হাসপাতালের উপর তাঁদের ভরসা নেই। ময়নাতদন্ত করা হোক, কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন কোনও হাসপাতালে।