নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘বৃদ্ধা মাকে খেতে পড়তে দিচ্ছেন না। খোরপোশের টাকাও দিচ্ছেন না। নিজের বাড়ি থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি আত্মীয়ের বাড়িতে থাকবেন? দেবীপক্ষ চলছে, যান রক্তমাংসে গড়া মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে আনুন। দেখবেন তাতে আপনার ভালোই হবে। আপনার বাড়ি উজ্জ্বল হয়ে উঠবে মায়ের খুশিতে। ওটাই হবে আপনার জীবনের শ্রেষ্ঠ পুজো।’ খোরপোশ সংক্রান্ত এক মামলায় শনিবার আলিপুরের বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চরম উষ্মা প্রকাশ করে এমন নির্দেশ দেন। পাশাপাশি এই পরামর্শও দেন সমীর সরকার নামে এক ব্যক্তিকে। নিজের মাকে দেখভাল করেন না বলে অভিযোগ উঠেছে সমীরবাবুর বিরুদ্ধে। মাকে ফিরিয়ে আনা শুধু নয়, এক মাসের মধ্যে সুদ সহ খোরপোশের সমস্ত টাকা তুলে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। পরবর্তী শুনানিতে পিটিশনের মাধ্যমে তা আদালতে পেশ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে সমীরকে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের তালদির বাসিন্দা জ্যোৎস্না সরকার আলিপুর আদালতে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। আদালত এক অন্তর্বর্তী রায়ে মাসে ছ’হাজার টাকা করে খোরপোশ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু অভিযোগ, গত সাতমাস ধরে টাকা দেননি ছেলে। সম্প্রতি বৃদ্ধা ফের আদালতের দ্বারস্থ হন। শনিবার ছিল শুনানি। অসুস্থ থাকায় জ্যোৎস্নাদেবী আসতে পারেননি। তাঁর আইনজীবী ছিলেন আদালতে। বিচারক অভিযোগ শোনার পর সমীরবাবুকে বলেন, ‘শুধুমাত্র নিজের ও ছেলে‑মেয়ের স্বার্থ দেখবেন না। তাতে আপনার ভালো হতে পারে না। অভাব‑অনটন থাকলেও বৃদ্ধ বাবা‑মাকে কখনই বোঝা ভাববেন না। তাঁদের দেখভাল করাও আপনার গুরুদায়িত্ব।’ সমীর বলেছেন, ‘এ নিয়ে আমি কোনও কথা বলব না।’