সংবাদদাতা, কাটোয়া: শহরাঞ্চলে বিগ বাজেটের থিমের সঙ্গে টক্কর দিচ্ছে গ্রামীণ এলাকার পুজোগুলি। নামী শিল্পীদের না নিয়ে ক্লাবের সদস্যরা নিজেরাই হাত লাগিয়ে থিমের মণ্ডপ গড়ে তাক লাগালেন। পূর্বস্থলীর তরুণ সঙ্ঘের পরিচালনায় মধ্য শ্রীরামপুর সর্বজনীন বারোয়ারি দুর্গাপুজো কমিটির এবারের থিম হাতে বোনা তাঁতকাপড়ের মণ্ডপ। ভিনরাজ্যের তাঁতের শাড়ি এসে রাজ্যের হস্তচালিত তাঁতশিল্পকে শেষ করছে। তাই তাঁতশিল্প বাঁচাতে পুজো কমিটি এবারে এমন থিম তুলে ধরেছে। পূর্ব বর্ধমান জেলার একটা বড় অংশের মানুষ তাঁতশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। জেলায় প্রায় ৭৪ হাজার তাঁতশিল্পী রয়েছেন। যারমধ্যে কাটোয়া ও কালনা মহকুমাতেই সবচেয়ে বেশি। তবে জেলার তাঁত বলয় হিসেবে পরিচিত পূর্বস্থলী। কালনা মহকুমার ধাত্রীগ্রাম ও শ্রীরামপুরের তাঁতের হাট রয়েছে। বর্তমানে গুজরাতের সুরাতের শাড়ি এসে বাংলার হস্তচালিত তাঁতশিল্পকে ধ্বংস করছে। এখানকার তাঁতশিল্পীরা সমস্যায় পড়ছেন। পূর্বস্থলীর সমুদ্রগড়, মধ্য শ্রীরামপুর তাঁত অধ্যুষিত অঞ্চল। তাই হস্তচালিত তাঁতশিল্পকে তুলে ধরতে তাঁতের শাড়ি দিয়েই মণ্ডপ গড়ে তোলা হয়েছে। নিজেদের হাতে বোনা তাঁতের নানা শাড়ি মণ্ডপজুড়ে। খড়ের ছাউনি দিয়ে গোলাকৃতি ঘর করে মণ্ডপে গ্রাম্য পরিবেশ তুলে ধরা হয়েছে। এবার তরুণ সঙ্ঘের পরিচালনায় দুর্গাপুজো ৫৯ বছরে পা দিল। একসময় পাড়ার বয়স্কদের হাত ধরেই পুজো শুরু হয়েছিল। এখন সেই পুজো এলাকার মানুষের নজর কেড়েছে। সভাপতি অজিত বসাক জানান, যেহেতু এলাকা তাঁত অধ্যুষিত, তাই প্রত্যেক তাঁতশিল্পীর হাতে বোনা শাড়ি জোগাড় করে মণ্ডপ সাজানো হয়েছে। সবাই মিলেই মণ্ডপ গড়ে তোলা হয়েছে। এবার আমাদের বাজেট প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। পুজোর পাঁচদিন নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।