আগামী মাস, নভেম্বরের শুরুতেই আবার পাহাড়ের বাগানে বোনাস নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ঘোষণা করল রাজ্য সরকারের শ্রম দফতর। শনিবার দুপুরে শ্রম দফতরের নর্থ জ়োনের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার চা শ্রমিক সংগঠন, চা মালিক সংগঠনগুলিকে চিঠি দিয়ে আগামী ৬ নভেম্বর ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের দিন জানিয়েছেন। তবে শিলিগুড়ি বা দার্জিলিং নয়, নভেম্বরের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক কলকাতা শ্রম দফতরে হবে বলে জানানো হয়েছে।
চলতি সপ্তাহে শ্রমিক সংগঠনগুলি বন্ধ, অবরোধ করার পরে নতুন করে পাহাড়ের বোনাস-চুক্তি নিয়ে পুজোর পরে বৈঠকের কথা জানায় শ্রম দফতর। তবে তাতে দিনক্ষণ ছিল না। এর পরে, আগামী সোমবার ‘শ্রমিক ভবন’ ঘেরাওয়ের কথা সামনে আসতেই শনিবার দুপুরে পরবর্তী বৈঠকের দিন স্থির হয়। শ্রম দফতরের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘শ্রমমন্ত্রীর নির্দেশে পর পর দু’টি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। প্রথমে উৎসবের পরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের কথা বলা হয়। পরে সংগঠনগুলি চিঠি দিলে এ বার দিনক্ষণ জানানো হয়েছে। আলোচনায় কোনও রাস্তা বেরোবেই।’’
নতুন দিনক্ষণ ঘোষণার পরে আজ, রবিবার দার্জিলিঙে নতুন করে বৈঠক করতে চলছেন চা শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চের নেতারা। চা শ্রমিকদের মঞ্চের নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ সমন পাঠক বলেন, ‘‘শ্রম দফতর নতুন করে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের কথা বলেছে। আমাদের ভূমিকা কী হবে, তা আটটি সংগঠন বসে ঠিক করা হবে। তার পরে যৌথ ভাবে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে।’’
তবে শিলিগুড়ির বদলে কলকাতায় বৈঠক ডাকা নিয়ে চা শ্রমিক নেতাদের একাংশের আপত্তি রয়েছে। তাঁরা জানান, পাহাড়ের চা বাগানের বৈঠক দার্জিলিঙে হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা-সহ নানা কথা বলে পাহাড়ে তা করা হয়নি। তার পরে তা সমতলে উত্তরের শ্রম দফতরের সদর দফতর ‘শ্রমিক ভবনে’ পর পর ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। পাহাড় থেকে শ্রমিক নেতারা নিয়মিত এসে তাতে যোগ দিয়েছেন। কলকাতায় বৈঠক হলে সব সিদ্ধান্ত শ্রমিকেরা পরে জানবেন। ‘শ্রমিক ভবন’-এর বাইরে তাঁরা থাকতেও পারবেন না। আবার শ্রমিক নেতাদের কলকাতায় যাতায়াতও করতে হবে। তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
এর মধ্যেই সরকারি নির্দেশিকা অনুসারে ৪ অক্টোবরের মধ্যে পাহাড়ের বাগানগুলিতে ১৬ শতাংশ হারে বোনাস বিলিও শুরু হয়ে গিয়েছে। সংগঠন, শ্রমিকেরা মুখে ২০ শতাংশ দাবি বজায় রাখলেও, পাহাড়ের বেশিরভাগ মালিক পক্ষই শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে ১৬ শতাংশ হারে বোনাসের টাকা পাঠিয়ে দিয়েছে। কিছু বাগানে নিজেদের পছন্দ মতো ১৫ শতাংশ এবং পাঁচ শতাংশ হারে ভাগ করে টাকা অ্যাকাউন্টে দেওয়া হচ্ছে বলে শ্রমিক সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে। তবে বোনাস নিয়ে শ্রমিক-মালিক অসন্তোষের জেরে চা-বাগানের কাজ বন্ধ রয়েছে। বাগানের কারখানা, অফিস বন্ধ করা না হলেও শ্রমিকেরা কাজ করছেন না। বাগানের তৈরি চা বাইরে আসছে না। শ্রমিকেরা বাগানে ধর্না-বিক্ষোভ জারি রেখেছে। অচলাবস্থা বাগানগুলিতে বজায় রয়েছে।