সরকারি চাকুরিরত কোনও কর্মীর মৃত্যু হলে তাঁর একেবারে নিকটাত্মীয়কে সহমর্মিতার কারণে নিয়োগ (কম্প্যাশনেট অ্যাপয়েন্টমেন্ট) দেওয়ার বিধি দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের। রাজ্য শ্রম দফতর এ নিয়ে নানা সময়ে বিধি সংশোধন বা সরলীকরণ করে থাকে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কিছু দিন আগে আদেশনামা দিয়ে সরকার আরও কিছুটা সরলীকরণের পথে হেঁটেছে। জানানো হয়েছে, নিকটাত্মীয়ের চাকরির প্রশ্নে মৃত কর্মীর মা-বাবার তরফে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (এনওসি) প্রয়োজন হবে না। তবে তার সঙ্গে আরও কিছু শর্তও রেখেছে সরকার।
শ্রম দফতরের যে সংশোধনী হয়েছে সর্বশেষ, তাতে পরিবারের সদস্য বলতে বোঝানো হচ্ছে কোনও সরকারি কর্মীর স্ত্রী বা স্বামী, পুত্র বা কন্যাকে। কন্যা বিবাহিত, অবিবাহিত বা বিবাহবিচ্ছিন্না হলেও তিনি বাবার মৃত্যুর পরে চাকরি পাওয়ার যোগ্য। আবার কোনও সরকারি কর্মী অবিবাহিত হলে সংশ্লিষ্টের ভাই বা বোন নিকটাত্মীয় বলে বিবেচিত হবেন। প্রশাসনিক সূত্রের ব্যাখ্যা, এ ক্ষেত্রে মৃত সরকারি কর্মচারীর মা-বাবার থেকে এনওসি আর দরকার হবে না। কারণ, সংশ্লিষ্টেরা আর সরকারি চাকরি পেতে পারেন না। তবে তাঁদের পরিবর্তে যিনি চাকরি পাবেন, তাঁকে মৃত কর্মীর মা-বাবাকে দেখভাল করতে হবে। সরকারি আদেশনামায় বলে দেওয়া হয়েছে, যিনি চাকরি পাবেন, তিনি পরিবারের বাকি নির্ভরশীল সদস্যদের দেখভাল করছেন, সেই মুচলেকা সরকারকে দিতে হবে প্রতি বছরে।
তবে এমন হতেই পারে, কোনও সরকারি কর্মীর মৃত্যুর পরে তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্য চাকরি পাওয়ার যোগ্য। অথচ সরকার চাকরি দেবে একজনকেই। সে ক্ষেত্রে যিনি সেই চাকরির আবেদন করবেন, চাঁর চাকরি পাওয়ার আগে বাকি সকলকে এনওসি দিতে হবে। তবেই সেই চাকরির আবেদন বৈধ বলে ধরা হবে। নির্দেশিকায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও কর্মীর মৃত্যুর পরে তাঁর সরকারি চাকরি পেয়ে সংশ্লিষ্টের স্ত্রী দ্বিতীয়বার বিবাহ করলেও স্বামীর (মৃত সরকারি কর্মীর) মা-বাবা-সহ নির্ভরশীল সদস্যদের ধারাবাহিক ভাবে দেখভাল করতে খোরপোষ দিতে বাধ্য থাকবেন।
সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকাকে সামনে রেখে পুলিশের জন্যও একই বিধি চালু করেছে রাজ্য। সব জ়োনাল আইজি, পুলিশ কমিশনার (কলকাতা ছাড়া), জ়োনাল ডিআইজি, পুলিশ সুপার-সহ বাকি পুলিশ কর্তাদের এই তথ্য জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্য পুলিশের কর্তারা।