এই সময়: থানার মধ্যেই শ্লীলতাহানির শিকার হলেন এক মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার! অভিযুক্ত ব্যক্তি, কলকাতা পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর। ঘটনাস্থল, দক্ষিণ কলকাতার পার্ক স্ট্রিট পুলিশ স্টেশন।অভিযোগ, পুজোয় পোশাক দেওয়ার নাম করে গভীর রাতে নির্যাতিতাকে রেস্ট রুমে ডাকেন ওই সাব ইনস্পেক্টর। সালোয়ার কামিজ দেওয়ার সময়ে শ্লীলতাহানি করা হয় তরুণীর। শুক্রবার রাতে এই ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় পুলিশ মহলে। পরে নিগৃহীতার অভিযোগ নিতে অস্বীকার করারও অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট থানার ডিউটি অফিসারের বিরুদ্ধে। বিষয়টি মিটমাট করে নেওয়ার চাপ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ ওই সিভিকের পরিবারের। পুরো বিষয়টি তাঁরা লিখিতভাবে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর, কলকাতা পুলিশের কমিশনারের দপ্তরে জানিয়েছেন।
আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে খুন-ধর্ষণের ঘটনায় ধৃত কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায় বর্তমানে জেল হেফাজতে। ওই ঘটনার পরে সিভিকদের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। আর এ বার কলকাতা পুলিশেরই এক মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় হইচই পড়ে গিয়েছে বাহিনীর অন্দরে। প্রশ্ন উঠছে, সিভিকদের পোশাক দেওয়া হলেও কেন ওই তরুণীকে রাত ১টা নাগাদ রেস্ট রুমে ডাকা হবে?
লালবাজার সূত্রের খবর, বছর ২৪-এর ওই সিভিক ভলান্টিয়ার পার্ক স্ট্রিট থানায় কম্পিউটার সেকশনে কাজ করেন। শুক্রবার থানায় সিভিকদের জন্য পোশাক দেওয়া হচ্ছিল। অভিযোগ, ঘটনার দিন রাত ৯টায় ডিউটিতে যোগ দেন তিনি। এরপর রাত ১টা নাগাদ তাঁকে থানার তিনতলার রেস্ট রুমে ডাকা হয়। সেখানেই মদ্যপ অবস্থায় শারীরিক নিগ্রহ করেন অভিযুক্ত সাব ইনস্পেক্টর। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত পুলিশকর্মী।
নিগৃহীতার পরিবারের দাবি, ‘শনিবার লালবাজার গেলে সেখানেও লিখিত অভিযোগ জমা করতে পারিনি। বাধ্য হয়ে আমরা স্পিড পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি নবান্ন এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে জানিয়েছি।’ যদিও অভিযুক্ত এসআইয়ের সহকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, ‘কিছুক্ষণের জন্য ওই তরুণী ঘরে গিয়েছিলেন। কী ভাবে ঘটনাটি ঘটল, তা বুঝতে পারছি না। যদি কেউ দোষ করে থাকেন, তাঁর শাস্তি হওয়া উচিত।’
পার্ক স্ট্রিট থানা সূত্রে খবর, ওই রেস্ট রুমের ভিতরে কোনও সিসিটিভি না থাকলেও এমন গুরুতর অভিযোগ ওঠায় নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। নির্যাতিতা ২০১৭ সালে সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজে যোগ দেন। স্নাতক ওই তরুণীর কম্পিউটারের প্রশিক্ষণ থাকায় পার্ক স্ট্রিট থানার কাজকর্ম সামলাতেন তিনি।
এক পুলিশ কর্তার বক্তব্য, ‘আমরা ওই তরুণীর বাড়িতে তদন্ত করতে পুলিশকর্মীদের পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁকে পাইনি। ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না।’ যদিও পরিবারের দাবি ঠিক তাঁর উল্টো। তাঁদের বক্তব্য, ‘রাতেই আমরা অভিযোগ জানাতে চেয়েছিলাম। নেওয়া হয়নি। আমরা সরকারি হাসপাতালে মেডিক্যাল টেস্ট করেছি। সেই রিপোর্টও আমাদের কাছে রয়েছে।’