এই সময়: আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে হাউস স্টাফ আশিস পাণ্ডের আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ পেল সিবিআই। অভিযোগ, গত কয়েক বছরের আশিসের মাধ্যমে বিপুল টাকা পৌঁছে গিয়েছে সন্দীপের ঘনিষ্ঠদের কাছে। হাত বদল হয়ে সেই টাকা সন্দীপ পেয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখতে আশিসকে নিজাম প্যালেসে জেরা করছেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্যও তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। সেই নথিতে সন্দেহজনক লেনদেনের হদিশ মিলেছে বলে কেন্দ্রীয় সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে।আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে সন্দীপ-আশিস ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। অবৈধভাবে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে মেডিক্যাল সরঞ্জাম কেনাবেচায় আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে বলে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ। জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, সন্দীপের হয়ে কাজ করতেন আশিস। প্রতিবাদ করলে জুনিয়র ডাক্তারদের ফেল করিয়ে দেওয়া এবং সিনিয়র ডাক্তারদের উত্তরবঙ্গে ট্রান্সফার করে দেওয়ার হুমকি দিতেন তিনি।
সূত্রের খবর, আর্থিক দুর্নীতি মামলায় ধৃত ভেন্ডার বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরা এবং সন্দীপের প্রাক্তন দেহরক্ষী আফসার আলি খানের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল আশিসের। কার্যত তাঁদের-ই ‘দখলে’ ছিল হাসপাতালের যাবতীয় বিষয়। ই-টেন্ডারের বদলে এক লক্ষ টাকার কম অঙ্কের টেন্ডার পেতেন বিপ্লব এবং সুমন হাজরা। অথবা তাঁদের ঘনিষ্ঠরা। এই দুর্নীতিতে কয়েকটি কাগুজে কোম্পানিও খোলা হয়েছিল।
শুধু তাই নয়, অবৈধ ভাবে বাইক পার্কিং করা হতো হাসপাতালে। সেখান থেকেও টাকা তোলার অভিযোগ রয়েছে। যা করতেন আফসারের ভাই। অভিযোগ, হাসপাতালের সমস্ত রকমের দুর্নীতির নেপথ্যে সন্দীপের মদত ছিল।
তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের দিন ৯ অগস্ট সেমিনার রুমের আশপাশে দেখা গিয়েছিল আশিসকে। আবার তার আগের দিন নিউটাউনের একটি হোটেল বুক করে সেখানে ছিলেন তিনি। সিসিটিভির ফুটেজ এবং হোটেলের এক কর্মীর বয়ান থেকে জানা গিয়েছে, আশিস ঘটনার দিন কয়েক বার হোটেল ঢোকেন এবং বাইরে যান। তাঁর সঙ্গে আরও একজন ছিলেন। হস্টেলে থাকলেও কেন তিনি হঠাৎ করে হোটেলে থাকতে গেলেন, সে বিষয়ে জানতে সন্দীপ এবং আশিসকে জেরা করে এ বিষয়ে ধোঁয়াশা কাটাতে চাইছেন গোয়েন্দারা।
আরজি কর হাসপাতালের টিএমসিপি ইউনিটের সভাপতি ছিলেন আশিস। ২০২২-২৩ সালে ইন্টার্নশিপ শেষে আরজি করে হাউস স্টাফ হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। এর পর, সন্দীপের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন।