কেরলের কোচি ওয়াটার মেট্রোর মতো আধুনিক সুবিধাযুক্ত বাতানুকূল জলযান এ বার ছুটবে কলকাতায় হুগলি নদীর বুকে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তায় রাজ্য পরিবহণ দফতর উত্তরে ত্রিবেণী থেকে দক্ষিণে ডায়মন্ড হারবার পর্যন্ত অংশে জলপথ পরিবহণ ব্যবস্থা উন্নত করার কাজ চালাচ্ছে। তারই অঙ্গ হিসাবে এ বার ব্যাটারিচালিত ১৩টি ফেরি তৈরির বরাত পেল গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স।
সম্প্রতি রাজ্য সরকারের তরফে সংস্থাকে ওই সব ফেরির নির্মাণ শুরুর বিষয়ে সম্মতি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। রাজ্য পরিবহণ দফতরের অধীনে ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন সম্মতি জানিয়েছে। ক্যাটামারান হালযুক্ত বা দু’টি করে সমান্তরাল হালের সমন্বয়ে তৈরি ওই সব ফেরি মূলত অ্যালুমিনিয়ামের পাত এবং ফাইবার রিএনফোর্সড প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হবে। হাইব্রিড প্রোপালসন (ফেরি ছোটানোর জন্য ইঞ্জিনের প্রযুক্তি) যুক্ত জলযানে ব্যাটারি ছাড়াও ডিজ়েলে চালানোর মোটর থাকবে।
মূলত নদীপথে চলার সময়ে ব্যাটারির চার্জ শেষ হলে ওই ফেরিকে যাত্রী-সহ জেটিতে পৌঁছে দিতেই ওই বিকল্প ব্যবস্থা। ইঞ্জিনের দ্বৈত প্রযুক্তি থাকায় ফেরিগুলিকে হাইব্রিড বলা হচ্ছে। পরিবেশবান্ধব ফেরিতে যাত্রী সুরক্ষায় বাড়তি নিরাপত্তা যোগ করতে ওই ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। দেশের একমাত্র ওয়াটার মেট্রো শহর কোচিতে একই প্রযুক্তির ফেরি চলাচল করে।
এর আগে ‘ঢেউ’ নামের ওই ফেরির নমুনা জানুয়ারিতে তৈরি করেছিল গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স। পরিবহণ দফতরের পছন্দ হওয়ায় ২৩০ কোটি টাকার ওই কাজের বরাত পাচ্ছে গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স। সব আবহাওয়ার উপযোগী করে সেগুলি নির্মাণ হচ্ছে।
যে ১৩টি ফেরির বরাত দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ছ’টি দু’টি ডেকযুক্ত। প্রতিটি ফেরির যাত্রী বহন ক্ষমতা ২০০। মূল ডেক বা নীচের তল সম্পূর্ণ বাতানুকূল হবে। প্রায় ৩০ মিটার লম্বা এবং ১০ মিটার চওড়া ফেরি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২ নটিক্যাল মাইল গতিতে ছুটবে। ওই ছ’টি ফেরি নির্মাণে খরচ প্রায় ১৩০ কোটি টাকা। বাকি সাতটি ফেরির প্রতিটির যাত্রী বহন ক্ষমতা ১০০। নির্মাণের খরচ প্রায় ১০০ কোটি টাকা। হুগলি নদীর জলপথ বিকাশ পরিকল্পনার আওতায় একাধিক জেটি সাজানো হবে। টিকিট পরীক্ষায় স্বয়ংক্রিয় গেট বসবে। শৌচাগার, কাফেটেরিয়া-সহ একাধিক পরিকাঠামো থাকবে।