মামলা লড়তে গিয়ে সম্মানহানি এবং নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কার মুখে পড়েছেন খোদ কলকাতা হাই কোর্টের এক মহিলা আইনজীবী। পুলিশের কাছেও সহযোগিতা না পেয়ে শেষমেশ হাই কোর্টেরই দ্বারস্থ হয়েছেন ওই আইনজীবী। শুক্রবার তাঁর মামলায় বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের নির্দেশ, ওই মহিলা আইনজীবীর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে পুলিশ এবং তাঁর অভিযোগের তদন্তেও সক্রিয় সহযোগিতা করবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ১১ নভেম্বর।
ওই মহিলা আইনজীবী জানান, অন্য এক মহিলাকে বিবাহবিচ্ছেদের বিষয়ে আইনি পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই রাতবিরেতে তাঁর মোবাইল ফোনে বিভিন্ন অবাঞ্ছিত ফোন আসা শুরু হয় এবং তাঁকে নানা কুপ্রস্তাব দেওয়া শুরু হয়। আইনজীবী প্রতিবাদ করলে ফোনের ও-পারে থাকা ব্যক্তিরা জানান যে তাঁর নম্বর ট্রেন, বাসের গায়ে ‘যৌনকর্মীর নম্বর’ হিসেবে লেখা ছিল। এমনকি, ফেসবুকের বিভিন্ন অশালীন গ্রুপেও তাঁর নম্বর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ওই মহিলা মক্কেলের স্বামীর দিকে সন্দেহের আঙুল উঠেছে।
মহিলা আইনজীবীর তরফে সওয়াল করতে দিয়ে তাঁর দুই কৌঁসুলি ময়ূখ মুখোপাধ্যায় এবং পূজা সোনকার আদালতে জানান যে লাগাতার এমন ফোনের জেরে ওই মহিলা আইনজীবী মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। লিখিত অভিযোগ করা হলেও পুলিশ এফআইআর রুজু করেনি। যদিও পুলিশের তরফে কোর্টে দাবি করা হয় যে তারা তদন্ত করছে এবং একটি বাসকে চিহ্নিত করে তার গায়ে লেখা ওই মহিলা আইনজীবীর নম্বর মুছে দেওয়া হয়েছে। তদন্তের জন্য আরও সময় চায় পুলিশ।
সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে রীতিমতো উষ্মাও প্রকাশ করতে দেখা যায় তাঁকে। আদালতের বাইরে ওই মহিলা আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘মহিলাদের সমস্যা নিয়ে কোর্টে লড়ব বলে এই পেশায় এসেছিলাম। কিন্তু নিজেই এমন হয়রানির শিকার হব, তা ভাবতেও পারিনি।’’