মা দুর্গার আরাধনায় শহরের সঙ্গে টেক্কা দিচ্ছে জেলাও। বিশেষ করে দক্ষিণ শহরতলির বড় পুজোগুলি বিগত কয়েক বছর ধরে আলো, থিমের রোশনাইতে চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে। মফস্সলের লক্ষ লক্ষ দর্শনাথী ভিড় করছেন সোনারপুর, নরেন্দ্রপুর, গড়িয়ার পুজোমণ্ডপগুলিতে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পৈতৃক ভিটে কোদালিয়া নেতাজি সংঘ কবি সুকুমার রায়কে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে ‘অসম্ভবের ছন্দেতেই’ নামক থিমে সাজানো হচ্ছে তাদের মণ্ডপ। সেখানে সুকুমার রায়ের সৃষ্টি করা বিভিন্ন চরিত্রগুলিকে মডেল আকারে তুলে ধরা হবে। তার উপর একটি থিম সং তৈরি করা হয়েছে, যা মণ্ডপে ঢুকলেই শোনা যাবে।পাশেই হরিনাভি চক্রবর্তীপাড়া এবার হিমাচল প্রদেশের চাটুলি শিবমন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করছে। মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহার করা হচ্ছে এক লক্ষ চুড়ি। এ ছাড়াও ফাইবার দড়ি ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হচ্ছে প্যান্ডেল। প্রায় ২২ লক্ষ টাকা বাজেট বলে জানিয়েছেন পুজো কমিটির সম্পাদক চঞ্চল চক্রবর্তী। হরিনাভি পল্লিমঙ্গল সমিতির সুবর্ণ জয়ন্তী বছরে মূল আকর্ষণ পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী সনাতন রুদ্রপালের প্রতিমা।
বাহারি আলো দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করার কাজ চলছে জোরকদমে। রাতের বেলা দেখলে মনে হবে শুধু আলো রয়েছে, কোনও কাপড় বা বাঁশ নেই। মানিকপুর অগ্রগামী সংঘের থিম অলিম্পিক। মণ্ডপের ভিতরে বিভিন্ন খেলার সরঞ্জাম দিয়ে সাজানো থাকবে। বাইরে অলিম্পিকে সোনা ও রুপোর মেডেল জয়ী অ্যাথলিট নীরজ চোপড়ার মূর্তি থাকবে। সুভাষগ্রাম পল্লিবাসীবৃন্দ ৪১ তম বছরে গুজরাটের একটি মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করছে। প্রতিমা সাবেকি ঘরানার।
অন্যান্য বছরের মতো এ বারও সোনারপুরে নজর কাড়তে রাজস্থানের অ্যালবার্ট মিউজ়িয়ামকে তুলে ধরছে এলাচি মিলন সঙ্ঘ। তাদের থিম ‘জয়পুরের জাদু’। জয়পুরের অ্যালবার্ট মিউজ়িয়ামের আদলে তৈরি করা হচ্ছে প্যান্ডেল। ভিতরটা ছোট ছোট পাথরের উপর কারুকার্য করে সেটা দিয়ে সাজানো হবে। অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জার কাজ পাঁচ মাস আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল মেদিনীপুরের হেঁড়িয়াতে।
গড়িয়ার অন্যতম পুরনো এবং ঐতিহ্যবাহী পুজো হিসেবে পরিচিত নবদুর্গা। এ বার তাদের ৮৪তম বছর। কাল্পনিক মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। তাতে আলো ও ধ্বনির মিশ্রণ থাকবে। তাদের বাজেট ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা অভ্র মুখোপাধ্যায় জানান, মণ্ডপের বাইরে এবং ভিতরে থাকবে নানা রকমের কারুকার্য। নরেন্দ্রপুরের আরও একটি জনপ্রিয় পুজো গ্রিন পার্ক। তাদের এ বার ৬৫ তম বছর। গতবার লুসেইল স্টেডিয়াম করে তাক লাগিয়েছিল এই পুজো কমিটি। এ বার তারা ১২ হাজার মাটির কলসি দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করছে। থিমের নাম ‘টাকা মাটি, মাটি টাকা।’