বিয়ে, অন্নপ্রাশনের মতো অনুষ্ঠান বাড়িতে খাবার পরিবেশন করে উপার্জিত টাকায় আয়োজিত হচ্ছে দুর্গাপুজো। গত ১৪ বছর ধরে এ ভাবেই অর্থ সংগ্রহ করে পুজো করে আসছে কাঁকসা ব্লকের কুলডিহা সর্বজনীন ওয়েলফেয়ার কমিটি। আগে গ্রামীণ পরিবেশে একেবারে সাদামাটা পুজো হতো।গত ক’বছর ধরে রাজ্য সরকারের অনুদান পাওয়ার পর থেকে পুজোর জৌলুস কিছুটা বেড়েছে। গ্রামে একমাত্র বারোয়ারি পুজো হলেও কারও বাড়িতে গিয়ে চাঁদা আদায় করা হয় না। গ্রামবাসী মণ্ডপে এসে স্বেচ্ছায় যে টাকা দেন সেটাই গ্রহণ করা হয়।
কুলডিহা গ্রামে চট্টোপাধ্যায়দের বাড়িতে দুর্গাপুজোর প্রচলন রয়েছে। কিন্তু গ্রামে সে অর্থে কোনও বারোয়ারি পুজো ছিল না। গ্রামের কয়েকজন যুবক ১৪ বছর আগে ঠিক করেন তাঁরা দুর্গাপুজো করবেন। এই যুবকদের কেউ ব্যবসা করেন আবার কেউ চাকরি। পাশাপাশি প্রত্যেকেই বছরভর বিভিন্ন ক্যাটারিং সংস্থার হয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাবার পরিবেশনের কাজ করেন।
ঠিক হয়, খাবার পরিবেশনে উপার্জিত টাকায় তাঁরা দুর্গাপুজো করবেন। সেই শুরু। বর্তমানে কমিটির সদস্য সংখ্যা ৪০। প্রত্যেকেই খাবার পরিবেশনের কাজ করেন। কিন্তু, রোজগারের সেই টাকা তাঁরা কেউ ব্যক্তিগত কাজে খরচ করেন না। পুরো টাকাই জমানো হয় পুজোর জন্য।
পুজো কমিটির সেক্রেটারি দুর্লভপাল বলেন, ‘সারা বছর কাজ অনুযায়ী টাকা জমে। গড়ে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মতো তহবিল তৈরি হয়। কারও কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হয় না। প্রতিমা দর্শনে এসে কেউ টাকা দিলে সেটা গ্রহণ করা হয়। গত কয়েক বছরে রাজ্য সরকারের অনুদান পাচ্ছি আমরা। তাতে একটু ভালো করে পুজোর আয়োজন করা যাচ্ছে। এ বার পুজোর মধ্যে একটি দিন যাত্রাপালার আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও করা হবে।’
কমিটির সভাপতি সূর্যদেব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও পুজোর আয়োজন করি। বাজেট খুবই কম। তা সত্ত্বেও গত তিন বছর ধরে কাঁকসা থানার বিচারে আমাদের পুজো তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। প্রতিবারের মতো এ বারও সাধারণ মন্ডপ ও প্রতিমা হচ্ছে। ইচ্ছে রয়েছে পরের বছর থিমের পুজো করার।’