আরজি করে থ্রেট কালচার, হাসপাতাল থেকে বহিষ্কৃত ১০ চিকিৎসক
আজ তক | ০৬ অক্টোবর ২০২৪
হুমকি সংস্কৃতি-সহ একাধিক অভিযোগে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে বহিষ্কৃত ১০ ডাক্তার। কাউন্সিলের বৈঠকে সম্মিলিতভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই ১০ জনের বিরুদ্ধে র্যাগিংসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ১০ অভিযুক্তকে আজীবনের জন্য হোস্টেল থেকে বহিষ্কার করা হবে। তাদের বাড়িতেও নোটিশ পাঠানো হবে।
শনিবার কাউন্সিলের বৈঠকে কলেজ কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক ও ইন্টার্নদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক চলাকালীন ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ বাইরে স্লোগান দিতে থাকেন। অভিযুক্ত ৫৯ জনের অবিলম্বে শাস্তির দাবি জানানো হয়। এরপর সভা শেষে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে কাউন্সিল। জানানো হয়, ১০ জন চিকিৎসককে আরজি কর থেকে অবিলম্বে বহিষ্কার করা হবে। তাদের অবিলম্বে হস্টেলও ছাড়তে হবে। ওই ১০ জন ডাক্তার ছাড়াও বাকি ডাক্তার, ইন্টার্ন, ছাত্র এবং হাউস স্টাফদেরও অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।
বহিষ্কৃত চিকিৎসরা হলেন, সৌরভ পাল, আশিস পান্ডে, অভিষেক সেন, আয়ুশ্রী থাপা, নির্জন বাগচি, সরিফ হাসান, নীলাগ্নি দেবনাথ, অমরেন্দ্র সিং, সাতপাল সিং এবং তানভির আহমেদ কাজি। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের হস্টেল খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের নাম রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলেও পাঠানো হবে।
আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সব অভিযুক্তের নামের একটি তালিকা প্রকাশ করে। তাদের বিরুদ্ধে হুমকি ও কলেজ ও হস্টেলে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ওই চিকিৎসকদের অনেকেই হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে অভিযোগ। ছাত্রছাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, অভিযুক্তরা হস্টলের ছেলেদের রাত তিনটের সময় হস্টেলে ডেকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত। এছাড়া ছাত্রদের একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে বাধ্য করা হত। সভা-সমাবেশে না গেলে অপদস্থ করা হত। ছাত্রাবাসে চলত র্যাগিং। কখনও কখনও গভীর রাতে মদ আনতে পাঠানো হত।
প্রসঙ্গত, গত ৯ অগাস্ট আরজি কর হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যাকে ঘিরে আন্দোলন শুরু হয়। এই প্রেক্ষাপটেই রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে 'হুমকি সংস্কৃতির' অভিযোগ ওঠে। এরপর আরজি কর হাসপাতালের শিক্ষার্থীরা কয়েকজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান। জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ৫৯ জনকে শনাক্ত করা হয়। তাদের মধ্যে চিকিৎসক ছাড়াও হাউস স্টাফ, ইন্টার্নরা রয়েছেন। হাসপাতালের তদন্ত কমিটি বেশ কয়েকজনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। অবশেষে শনিবারের বৈঠকের পর তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয় পর্ষদ।