পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর থানা এলাকার ভুবন মঙ্গলপুর গ্রামে এক গৃহবধুর খুনের ঘটনা সামনে আসে। অভিযোগে উঠে আসে ওই গৃহবধূ গ্রামেরই এক ব্যক্তি সুখচাঁদ মাইতির এক মহিলার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত অবৈধ সম্পর্কের ঘটনা জেনে ফেলেছিল। যার ফলে সুখচাঁদ ওই গৃহবধূকে বেশ কয়েকদিন ধরে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছিল। ওই গৃহবধূ ভয় পেয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে জানিয়েছিল। এরপর গতকাল শনিবার গৃহবধুর স্বামী বাড়িতে না থাকার সুযোগ নিয়ে প্রমাণ লোপাটের জন্য তার উপর চড়াও হয় ব্যাপক মারধর চালায় এমনকি ধর্ষণেরও চেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ।
কোনরকম প্রানে বাঁচতে চিৎকার করতে করতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পালানোর চেষ্টা করে গৃহবধূ। কিন্তু বাড়ির সামনে একটি ট্যাপ কলের চাতালে আছাড় খেয়ে পড়ে যায় গৃহবধূ। সেখানে জ্ঞান হারায় সে। এরপর অভিযুক্ত সুখচান্দ মৃত্যু নিশ্চিত করতে বিষ খাওয়ানোর চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে দেখতে পায় সুখ চাঁদ ছুটে পালিয়ে যাচ্ছে। আর ওই গৃহবধূ রক্তাক্ত অবস্থায় চাতালে পড়ে রয়েছে। চোখে মুখে জল দিতে তার জ্ঞান ফেরে এবং সমূহ সে জানায় প্রতিবেশীদের।
সুখ চাঁদ পালানোর সময় বাড়ি থেকে সোনা দানা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। মারধরের সময় অবৈধ সম্পর্কের সেই মহিলা ও ছিলেন বলে অভিযোগ। এরপর আক্রান্ত মহিলাকে তমলুকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রবিবার ভোররাতে তার মৃত্যু হয়। আজ সকালে মৃত্যুর খবর গ্রামে আসতেই উত্তেজনা ছড়ায় গ্রামবাসীদের মধ্যে। সুখচাঁদকে তার বাড়ি থেকে তুলে এনে গণপ্রহার দেওয়া হয়। পটাশপুর থানার পুলিস খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে গ্রামবাসীরা সাময়িক পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। এমনকি সুখ চাঁদকে পুলিসের হাতে তুলে দিতে অস্বীকার করে গ্রামবাসীরা। পুলিস সেখানে কোন রকমে সুখচাঁদকে উদ্ধার করে রক্তাক্ত অবস্থায় এগরা হাসপাতালে ভর্তি করে।
দুপুর একটার নাগাদ অভিযুক্ত সুখচাঁদেরও মৃত্যু হয়। গোটা ঘটনায় পুলিশ জানাচ্ছে নির্যাতিতা মৃতা মহিলার পক্ষ থেকে তার পরিবারের লোক অভিযোগ জানিয়েছে, পুলিস সেই লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করছে। তবে ধর্ষণের কোন অভিযোগ পায়নি পুলিস। সুখচাঁদের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক যে মহিলার সঙ্গে ছিল সেই মহিলাকে ইতোমধ্যে পুলিস আটক করেছে। অপরদিকে গণপিটুনির জেরে অভিযুক্তের মৃত্যু হওয়ায় পৃথকভাবে পুলিস মামলা রুজু করছে, সেটারও তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিস। এই ঘটনায় কংগ্রেস এবং বিজেপির পক্ষ থেকে পৃথক দুইটি প্রতিনিধি দল মৃতার বাড়িতে গিয়ে পৌঁছায় সেখানে কথা বলেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে এবং ওই মহিলার পরিবারের সঙ্গে।