লক্ষ্য এখনও অনেক দূর, সদস্য সংগ্রহে কি ভাটা! জল্পনা বঙ্গ-বিজেপিতে
এই সময় | ০৭ অক্টোবর ২০২৪
মণিপুষ্পক সেনগুপ্ত
এই সময়: বিজেপিতে নাম লেখানোর উৎসাহ কি কমছে বাংলায়? সাম্প্রতিক তথ্য-পরিসংখ্যান ঘেঁটে এমনই মনে করছেন বঙ্গের পদ্ম-বিগ্রেডের একাংশ। গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে গোটা দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান। পরিসংখ্যান বলছে, গত একমাসে এ রাজ্যে পদ্মের সদস্য হওয়ার যা হার, তা খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। যদিও রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা এখনও কোমর বেঁধে নামেননি। জোরদার প্রচার-অভিযান শুরু হলে সদস্য সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকবে।
২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে জিতে দিল্লির মসনদ দখল করেন নরেন্দ্র মোদীরা। এরপরই পদ্মে প্রথম শুরু হয় মোবাইলে মিসড-কল দিয়ে সদস্য অভিযান। ২০১৯-এ মিসড-কল দিয়ে সদস্য হওয়া বাংলায় বিজেপির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। এ বারের সদস্য সংগ্রহ অভিযানের মাধ্যমে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিতে চাইছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। পশ্চিমবঙ্গে সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে তাঁরা এক কোটি ছুঁতে চাইছেন।কিন্তু গত এক মাসের গতিপ্রকৃতি যেন অন্য কথা বলছে। সূত্রের খবর, এতদিনে মিসড-কল এবং ফর্ম পূরণ করে বিজেপির সদস্যপদ নিয়েছেন তিন লাখের কিছু কম। গত বারের চল্লিশ লাখ যে অনেক দূর! এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘হাতে এখনও অনেকটা সময়। তবে ট্রেন্ডটা ভালো ঠেকছে না। এই হারে এগোলে গত বারের সংখ্যাটা ছুঁতে অন্তত এক বছর লাগবে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তো নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে!’
বাংলায় সদস্য সংগ্রহ অভিযানের ভার বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দিয়েছেন রাজ্যসভায় দলের সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যর উপর। তিনি অবশ্য জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানিক ভাবে এই অভিযান তাঁরা এখনও শুরুই করেননি। তা সত্ত্বেও নিজে থেকেই বহু মানুষ মিসড-কল দিয়ে বিজেপির সদস্য হচ্ছেন। শমীক বলেন, ‘চলতি মাসের ২০ তারিখের পর আমাদের রাজ্যে সদস্য-সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে। কোনও প্রচার ছাড়াই এখন পর্যন্ত এ রাজ্যের বহু মানুষ বিজেপির সদস্যপদ নিয়েছেন। এটা আমাদের কাছে খুবই আশাপ্রদ।’
আরজি কর আবহের কথা মাথায় রেখেই নির্দিষ্ট সময়ে এই সদস্য সংগ্রহ অভিযানের প্রচার বাংলায় শুরু হয়নি বলে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের দাবি। শমীকের সুরে সুর মিলিয়ে বঙ্গ-বিজেপির এক প্রবীণ নেতার কথায়, ‘স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বহু মানুষ বিজেপির সদস্য হচ্ছেন। আমরা প্রচার শুরু করার পর সংখ্যাটা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকবে।’
তবে মিসড-কল দিয়ে পার্টির সদস্যপদ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আদৌ কতজনকে সক্রিয় রাজনীতির ময়দানে দেখা যায়, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘২০১৯-এর সদস্যপদ সংগ্রহ অভিযান চালানোর পর বাংলায় বিজেপির সদস্য সংখ্যা চল্লিশ লাখ হয়েছিল। ঝান্ডা হাতে মাঠে নামা তো অনেক পরের কথা, তার মধ্যে কতজন ২০২১-এ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে, সেটাই সন্দেহ।’