• দেবীর অঙ্গরাগের জন্য তিনদিন বন্ধ রাখা হচ্ছে নলহাটির গুহ্যকালী দর্শন
    বর্তমান | ০৭ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: অঙ্গরাগের জন্য তিনদিন মহারাজ নন্দকুমার প্রতিষ্ঠিত নলহাটির আকালিপুরের গুহ্যকালীর দর্শন করতে পারবেন না ভক্ত ও দর্শনার্থীরা। এমনকী অঙ্গরাগের সময় দেবীকে দর্শন করতে পারবেন না মন্দিরের সেবাইত থেকে কর্মকর্তারাও। সপ্তমীর দিন বিশেষ পুজো হোমযজ্ঞের মাধ্যমে দেবীর অভিষেকের পরই সকলের জন্য খুলে দেওয়া হবে গর্ভগৃহ। এই মর্মে মন্দিরের বাইরের দেওয়ালে বিজ্ঞপ্তি সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। 


    মন্দির সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি আট-দশ বছর অন্তর গুহ্যকালীর অঙ্গরাগ হয়। সেই সময় দেবী বিগ্রহ দর্শন বন্ধ থাকে। দিন কয়েক ধরে মন্দির রং করা হয়েছে। এবার দশবছর পর রবিবার থেকে দেবীর কষ্টি পাথরের বিগ্রহ রং করা হবে। সেইজন্যই এদিন থেকে দেবী দর্শন বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেখানে যে ভাস্কর দেবীর অঙ্গরাগ করবেন, তিনি ছাড়া গর্ভগৃহে কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। 


    এদিন থেকে মন্দিরের বাইরে গেটের সামনে দেবীর প্রতিকৃতিতে পুজো ও আরতি করা হয়। সেখানেই মাকে অন্নভোগ নিবেদন করা হয়। মন্দিরের সেবাইত দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অঙ্গরাগের জন্য তিনদিন দেবী দর্শন বন্ধ রাখা হয়েছে। সপ্তমীর দিন স্নানের উপকরণ ও মন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে দেবীকে স্নান, বিশেষ পুজো হোমযজ্ঞের মাধ্যমে দেবীর অভিষেক হবে। এরপরই সকলে মায়ের দর্শন করতে পারবেন। 


    এদিন অনেকেই না জেনে দেবী দর্শনে এসে নিরাশ হন। তাঁরা গেটে থাকা দেবীর প্রতিকৃতিতে পুজো অর্পণ ও কামনা জানিয়ে ফিরে যান।   


    জানা গিয়েছে, বছরের পর বছর ধরে মালা, সিঁদুর পরাতে পরাতে বা ধূপ ধোঁয়ায় বিগ্রহ একটু মলিন হয়ে যায়। সেই কারণে দেবীকে আবার নতুন করে সুসজ্জিত করা হয়। দেবী সেবার এমনটাই রীতি। 


    উল্লেখ্য, কথিত আছে, পুরাকালে মগধের রাজা জরাসন্ধ পাতালে এই কালীর সাধনা করতেন। তখন বিহারের গয়াকে মগধ বলা হতো। রাজস্থানের রানি অহল্যাবাই  শিবের স্বপ্নাদেশ পেয়ে মগধের একটি জায়গায় খনন কার্য চালান। সেখানেই শিবলিঙ্গের পাশাপাশি একটি কষ্টিপাথরের বেদি সমেত কালীমূর্তি পান। তদানীন্তন ইংরেজ শাসক ওয়ারেন হেষ্টিংসের নজরে পড়ে যায়। তখন বাংলা, বিহার ও ওড়িশার অধীন থাকা নবাব সিরাজদৌল্লার দেওয়ান মহারাজ নন্দকুমার মূর্তিকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণী নদীর আকালিপুর গ্রামের বটগাছের নীচে মূর্তিটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে তিনি মায়ের মন্দির নির্মাণ কাজে হাত লাগান। দেবী এখানে ভয়ঙ্কর দর্শনা। সাপের কুণ্ডলীর উপর পদ্মাসনে অধিষ্ঠিত। দেহের অলঙ্কারও সাপের। হাতে পায়ে সাপের আকৃতির চুড়ি, নুপূর। মাথায় সহস্র নাগের ফণা যুক্ত মুকুট। এক মানুষ সমান এই মূর্তির উপরিভাগ উন্মুক্ত। নিম্নভাগে ঘাগরা পরানো।
  • Link to this news (বর্তমান)