সংবাদদাতা, দেওয়ানহাট: সাংসদের পুত্রবধূর নাম অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগের তালিকায়। তাও আবার উপরের সারিতে। এই ঘটনায় কোচবিহারের তৃণমূল সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়ার বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। পুজোর মুখে সিতাইয়ে এটাই এখন মূল চর্চার বিষয়। বিজেপির দাবি, সাংসদ প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগে স্বজনপোষণ করেছেন। শুধু তাই নয়, এই তালিকায় নাম রয়েছে সিতাইয়ের চামটা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান বাবলি রায় সরকার বর্মনেরও। শাসকদলের সাংসদের ঘরের লোকের নাম অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগের তালিকায় থাকায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।
তালিকায় পুত্রবধূর নাম থাকার কথা স্বীকার করেছেন তৃণমূল সাংসদ। তাঁর যুক্তি, যাবতীয় নিয়ম মেনে লিখিত পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে সব হয়েছে। তালিকায় আমার পুত্রবধূর নাম রয়েছে এটা ঠিক। তবে যোগ্যতা থাকার পরও কি বউমার চাকরি পাওয়ার অধিকার নেই! আসলে লোকসভা ভোটের পর থেকে বিজেপি চোখে সর্ষের ফুল দেখছে। তাই অপপ্রচার করছে। তাতে ওদের কোনও লাভ হবে না। স্বজনপোষণের অভিযোগ ভিত্তিহীন। নিজের যোগ্যতায় আমার পুত্রবধূ চাকরি পেয়েছে। গত ৩ অক্টোবর সিতাই ব্লকের সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্পের (আইসিডিএস) অধীনে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও হেল্পার পদে সফল প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ হয়। সেই তালিকায় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী পদে ২৫ জনের নাম রয়েছে। তাতে পাঁচ নম্বরে সাংসদ জগদীশবাবুর পুত্রবধূ নিয়তি রায়ের নাম রয়েছে। ১০ নম্বরে রয়েছে চামটার তৃণমূল প্রধান বাবলি রায় সরকার বর্মনের নাম। এদিকে, হেল্পার পদে পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২১ জনের নামের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। অনেকে নিয়োগের চিঠিও পেয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে ময়দানে নেমেছে বিজেপি। দলের কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বোস বলেন, রাজ্যজুড়েই নিয়োয়ে স্বজনপোষণ এবং দুর্নীতি চলছে। সিতাইও তার ব্যতিক্রম নয়। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগের তালিকায় তৃণমূল সাংসদের পুত্রবধূর নাম একদম উপরের দিকে। নাম রয়েছে তৃণমূলের প্রধানেরও। এছাড়াও একাধিক তৃণমূলের অঞ্চল ও স্থানীয় নেতাদের পরিবারের লোকেদের নাম তালিকায় জ্বলজ্বল করছে। আমরা বিষয়টি দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি। নির্দেশ পেলে জেলাজুড়ে আন্দোলন হবে। এদিকে, চামটা অঞ্চলের প্রধান বাবলি রায় সরকার বর্মনের স্বামী কনক বর্মন বলেন, লিখিত পরীক্ষা ও ইন্টারভিউ দিয়ে নিজের যোগ্যতায় স্ত্রীর চাকরি হয়েছে। যাঁরা চেষ্টা করেও পাননি, তাঁরাই এখন অপপ্রচার করছেন।