রামনগরের ঘোষ বাড়ির পুজোয় একসময় আনাগোনা ছিল ব্রিটিশদের
এই সময় | ০৭ অক্টোবর ২০২৪
ঘোষ বাড়়িতে নিয়মিত আসতেন লর্ড ক্যানিং। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে যাওয়ার পথেও, দুর্গাপুজোর সময়ে এই বাড়িতে এসেছিলেন তৎকালীন বড়লাট লর্ড ক্যানিং। সেই সময়ে পুজোতে বনেদিয়ানার সঙ্গে ছিল জৌলুস। এখন জৌলুস হারিয়ে গেলেও বনেদিয়ানাকে ধরে রেখেই দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের রামনগরের ঘোষ বাড়িতে।রামনগরে জমিদারির পত্তন করেছিলেন কৈলাশচন্দ্র ঘোষ। তাঁর পুত্র নরেন ঘোষ দুর্গাপুজোয় জমিদারির জৌলুস এবং আভিজাত্য ধরে রাখতে শুরু করেছিলেন। ১৮৮২ সালে শুরু হয় পুজো। সেই থেকেই আজও 'কৈলাশ ভবন'-এ ঘোষ বাড়ির পুজো হয়ে আসছে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, জমিদারির সেই পুরাতন রীতি মেনেই এখনও পুজো হয়। ঘোষ বাড়িতে দুর্গাপুজোর জৌলুস কমলেও এখনও বনেদিয়ানা কমেনি। পরিবারের সদস্য সুধাংশু ঘোষ এক সময়ে জেলার একমাত্র ব্যারিস্টার ছিলেন। সনাতন ধর্মকে রক্ষা করার জন্য তিনি ‘মহাভারত সুধা’ গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। তাঁর চার ছেলের মধ্যে একমাত্র দেবব্রত ঘোষ জীবিত রয়েছেন। এখন তাঁর হাত ধরেই চলছে এই পুজো।
পরিবারের অন্য এক সদস্য মলয় ঘোষ জানান, লর্ড ক্যানিং ছিলেন জমিদার নরেন ঘোষের অতি ঘনিষ্ঠ। তাই ক্যানিং যাওয়ার পথে দুর্গাপুজোর সময় এই বাড়িতে তিনি এসেছিলেন। তিনি জানান, এখন আগের বেশ কিছু নিয়ম বাদ দিতে হয়েছে। আগে ছাগ বলি হত। এখন তা বন্ধ করে পুজোয় আখ, চালকুমড়ো বলি হয়। অষ্টমীর দিন ঘোষ বাড়ির পুজোর নিরামিষ খাবার খেতে ভিড় জমান গ্রামের মানুষজন।
পরিবারের অন্য সদস্য উদয় ঘোষ জানান, আগে পুজোয় অনেক আড়ম্বর ছিল। কিন্তু জমিদারি প্রথার বিলোপের পর আড়ম্বর কমেছে। দেবীর নামে যে সম্পত্তি আছে তা থেকে যে আয় হয় তা দিয়েই এখন পুজো করা হয়। তবে পুজোর আনন্দ কমেনি। পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের প্রতিনিধি তিয়াসা ঘোষও জানান, পুজোর দিনে প্যান্ডেল হপিং করার পরিবর্তে বাড়িতে সবার সঙ্গেই আনন্দ উপভোগ করতে পছন্দ ও স্বাচ্ছন্দ করেন তাঁরা।