• বড়জোড়ার মহামায়া মন্দিরে জলঘড়ি দেখে ঠিক হয় সন্ধিপুজোর সময়
    এই সময় | ০৭ অক্টোবর ২০২৪
  • গ্রামে তৈরি হয় না দেবী দুর্গার মূর্তি। পুজোর সময়ে বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়ার সাহারজোড়া গ্রামের মহামায়া মন্দিরে আলাদা করে ঘট স্থাপন করা হয়। একটি টিনের ঘরে ঘট স্থাপন করে দেবী দুর্গার আরাধনা হয়। জমিদারি আমলে শুরু হওয়া এই প্রথা এখনও চলে আসছে। এছাড়াও এখানে সন্ধিপুজোর সময় ঠিক করা হয় জলঘড়ি দেখে। কর্মসূত্রে এখন যারা বাইরে থাকেন, দশমীর দিনে সবাই ফিরে আসেন নিজেদের গ্রামের বাড়িতে। গ্রামের বাসিন্দারা জানান, এই নিয়মই চলে আসছে যুগযুগ ধরে।জঙ্গলে ঘেরা প্রাচীন এই জনপদে দুর্গা তো বটেই অন্য কোনও দেবীর বিগ্রহ বা প্রতিমা তৈরিও করা নিষিদ্ধ। গ্রামে যে মহামায়া মন্দির আছে সেখানে প্রতিদিনই পুজো হয়। সেখানে নিত্যসেবার পাশাপাশি দুর্গাপুজোর সময়ে হয় বিশেষ আয়োজন। এক সময়ে এই গ্রাম বিষ্ণুপুরের মল্লরাজদের অধীনস্থ জমিদারের ছিল। তাঁদের আমলেই শুরু হয় পুজো। এখন এই পুজোর দায়িত্ব সামলায় গ্রামের ‘ষোলো আনা কমিটি’।

    জনশ্রুতি এই, সূরজ বাউড়ি নামে এক কৃষক লাঙল দিয়ে জমি চষার সময় দেবীর প্রস্তর মূর্তি পেয়েছিলেন। লাঙলের ফলা সেই প্রস্তর মূর্তিতে ঠেকতেই জমি লাল হয়ে যায়। পরে গ্রামের জমিদার সেই মূর্তি নিয়ে এসে নিত্য পুজোর নির্দেশ দেন। সেই থেকে দেবী 'মা মহামায়া' হিসেবে পূজিত হচ্ছেন। সেই প্রস্তর খণ্ডে আজও লেগে আছে আঘাতের চিহ্ন।

    গ্রামের বাসিন্দা স্বপন রায় জানান, গ্রামের দেবী মা মহামায়া। তাই সাহারজোড়া তো বটেই আশেপাশের কোনও গ্রামেই দেবীর প্রতিমা গড়ে পুজোর চল নেই। ৫০০ বছরের বেশি সময় ধরে জমিদার আমলের রীতি আজও অনুসরণ করা হয়।

    মন্দিরের পুরোহিত নিতাই রায় জানান, জলঘড়ি দেখেই সন্ধি পূজার সময় নির্ধারণ করা হয়। বংশপরম্পরায় এই কাজ করে আসছেন শালতোড়া থেকে আসা ‘ঘড়িয়ালরা’। একইভাবে এক শাঁখারির পরিবার এখনও নিয়মিত কপুজোর শাঁখা পৌঁছে দিয়ে যান। অষ্টমী এবং বিজয়া দশমীতে হয় ছাগবলি। দশমীতে রাতভর বলি এবং পুজো হয়।
  • Link to this news (এই সময়)