গা ছমছম করতে বাধ্য, দর্শনার্থীদের চমকে দেবে ‘হন্টেড হাউস’ থিমের এই মণ্ডপ
এই সময় | ০৮ অক্টোবর ২০২৪
বিশাল বটবৃক্ষ আবৃত দালান। গা ছমছমে পরিবেশের মাঝে তন্ত্র সাধনা করছেন সাধক। অশরীরি আত্মার উপস্থিতি উপলব্ধি করতে পারবেন অনেকেই। ‘অলৌকিক’ থিমের মাধ্যমে দর্শনার্থীদের শিহরণ জাগানো অনুভূতি দিতে প্রস্তুত মুর্শিদাবাদের গোরাবাজার ইয়ুথ ক্লাব।উদ্যোক্তাদের দাবি, বহরমপুর গোরাবাজার ইয়ুথ ক্লাবের পুজো মণ্ডপের লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের পাঁচ মিনিটের শো দর্শকদের রোমাঞ্চকর গা ছমছমে পরিবেশে শিহরণ জাগাবে। ক্লাবের নিজস্ব মাঠে ভাগীরথীর তীরে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। মণ্ডপের সামনের অংশটি প্রাচীন প্রাসাদের ভগ্নাবশেষের আদলে তৈরি করা হয়েছে। প্রাসাদের বাইরে বিশাল আকৃতির বট গাছ। ওই প্রাসাদেই লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের মাধ্যমে দেখানো হবে অশরীরি আত্মা ও বিষাক্ত জীবজন্তুর প্রতিচ্ছবি।
মণ্ডপের বাইরেই অশুভ শক্তিকে বিশাল বটবৃক্ষ আবৃত দালানে বন্দি করে রেখেছেন এক তান্ত্রিক সাধক। লাইট এন্ড সাউন্ডের মধ্য দিয়ে দর্শকরা এগোলে পাবেন প্রাচীন শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠিত মন্দির। থিম ভাবনায় দেখানো হচ্ছে অশুভ শক্তিকে বিনাশ করছে ‘সত্যম, শিবম, সুন্দরম’। এরপরের ধাপে মণ্ডপে বিরাজ করছে মায়ের মৃন্ময়ী মূর্তি। কাল্পনিক এই থিমের রূপকার জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত মণ্ডপ শিল্পী পবিত্র কুমার।
পুজো কমিটির সভাপতি বিবেকানন্দ দাস বলেন, ‘আমাদের প্রতিবারের থিমে অভিনবত্ব থাকে। এবার শিশু, কিশোরদের আনন্দ দিতে এই থিমের পরিকল্পনা করা হয়েছে। আশা করি সেরার তালিকায় থাকব।’ ইয়ুথ ক্লাবের দুর্গা পুজো এবার ৪৯তম বর্ষে পড়ল। এলাকায় ইয়ুথ ক্লাবের পুজো সম্প্রীতির পুজো হিসাবেই জনপ্রিয়। ক্লাবের সম্পাদক জালালউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘স্থানীয় হিন্দু, মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ ক্লাব ও পুজোর সঙ্গে একাত্মভাবে জড়িয়ে রয়েছে। সারা বছর বিভিন্ন সামাজিক কাজ ও দুর্গত মানুষের আমরা বর্ণভেদ না করেই পাশে দাঁড়াই।’ বরাবর থিমের পুজো করে আসছে ইয়ুথ ক্লাব। যুগে যুগে নারী, ভাগীরথীতে নৌকায় দুর্গা, হাওড়া ব্রিজের থিম করে একাধিক পুরস্কার ঝুলিতে তুলেছে ইয়ুথ ক্লাব। এবারের 'দ্য হন্টেড হাউস' সম্পূর্ণ কাল্পনিক থিম।
উদ্যোক্তাদের দাবি, বট গাছ ঘেরা ভগ্নপ্রায় প্রাসাদ বাইরে থেকে দেখলেই গা শিউরে উঠবে। তান্ত্রিকের দেওয়া গন্ডি ডিঙোলেই বট গাছ থেকে ঝুলতে দেখা যাবে ভূত, নরকঙ্কাল, বাদুড়, সাপ, মাকড়শা। বিভিন্ন দিক থেকে ধেয়ে আসবে শিরদাঁড়ায় ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দেওয়া অদ্ভুত শব্দের কোরাস।
কমিটির অন্যতম সদস্য আকাশ দাসগুপ্ত জানান, মণ্ডপের পরিসর অনুযায়ী ৫০-৬০ জনকে একসঙ্গে ভিতরে ঢোকানো হবে। পাঁচ মিনিটের লাইট এন্ড সাউন্ডের শো দেখে দর্শনার্থীরা পা বাড়াবেন প্রতিমা দর্শনে। ইয়ুথ ক্লাবের এবারের প্রতিমা হচ্ছে সম্পূর্ণ মাটির সাজের দেবী মূর্তি। দেবীর অলঙ্কার, সাজসজ্জা মাটির তৈরি। উদ্যোক্তাদের দাবি, প্রবেশ পথটি আঁকাবাঁকা দীর্ঘ করা হয়েছে। যাতে দর্শনার্থীরা প্রাসাদে প্রবেশের আগেই প্রাসাদের বাইরের অংশটি ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে যেতেই উপভোগ করতে পারেন। মণ্ডপের সামনে বিশাল মাঠে মেলাও বসছে। উদ্বোধনের দিন থেকেই ভিড় সামলাতে ক্লাব সদস্যরা মহড়া শুরু করে দিয়েছেন।