বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের লোকপুর থানার অন্তর্গত ভাদুলিয়া গ্রামে জিএমপিএল, অর্থাৎ গঙ্গারামচক মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেড কোলিয়ারি রয়েছে। সেখানে কয়লার চাই ভেঙে উত্তলোনের জন্য ডিটোনেটর ও জিলেটিন স্টিক দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়৷ স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সময় অসাবধানতাবশত বড়সড় দূর্ঘটনা ঘটে। জিলেটিন স্টিকের গাড়ি পর্যন্ত বিস্ফোরণে উড়ে যায়৷ ঘটনায় ৭ জন খাদান শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন জয়দেব মুর্মু, সোমলাল হেমব্রম, মঙ্গল মারান্ডি, জুডু মারান্ডি, পলাশ হেমব্রম, রুবিলাল মুর্মু। মৃতদের বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে৷ খনিতেই তাদের ছিন্ন ভিন্ন দেহ পড়েছিল৷ এই মুহুর্তে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি, আহত ৩ জন সিউড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বীরভূম জেলা অতিরিক্ত পুলিস সুপার (বোলপুর) রাণা মুখোপাধ্যায় জানান, ফরেন্সিক দলকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এসে নমুনা সংগ্রহ করবেন৷ এছাড়া, মৃতদের পরিবার পিছু ৩০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার হবে ও পরিবার পিছু ১ টি করে হোম গার্ডে চাকরি দেওয়া হবে। এমনটাই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অতিরিক্ত পুলিস সুপার বলেন, "খাদান কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে। আমরা দেহ উদ্ধার করেছি। ৩ জনের চিকিৎসা চলছে৷ পরবর্তীতে কেউ যদি কোন অভিযোগ দেয় মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে, তখন তদন্ত করা হবে৷"
এদিকে, এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি করেছেন দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেন৷ তাঁর অভিযোগ, সঠিক পরিকাঠামো ছাড়াই কয়লা উত্তোলন হত৷ তিনি আরও বলেন, "খুবই মর্মান্তিক ঘটনা৷ বিস্ফোরণে এতগুলো প্রাণ গেল, আহত কতজন৷ প্রশাসনের মদতে এই কয়লা খনি চলে। জঙ্গল কেটে খনি করা হয়, ওভার লোড গাড়ি যায়৷ অতিরিক্ত গভীর খনন করা হয়৷ আর বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি রাস্তা দিয়ে আসছে৷ আজ যদি এই বিস্ফোরণ জনবহুল এলাকায় ঘটত কী হত৷ প্রশাসন দায়িত্ব এড়াতে পারে না৷ তাই আমরা চাই এনআইএ তদন্ত হোক। তাহলেই সত্য সামনে আসবে।"