• স্বামী পরিযায়ী, সন্তানের পুজোর পোশাক লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায়
    বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৪
  • মনসুর হাবিবুল্লাহ, দিনহাটা: রেখা রায় গৃহবধূ। বাড়ি দিনহাটার বাসন্তীর হাটে। তাঁর স্বামী কাজের খাতিরে ভিনরাজ্যে আছেন। বাড়িতে এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে তিনি সংসার সামলাচ্ছেন। দুই সন্তানই পড়াশোনা করে। ছেলে নবম শ্রেণিতে, আর মেয়ে ক্লাস সেভেনে। পুজো আসতেই নতুন পোশাকের বায়না ধরেছে দু’জনই। পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করা স্বামীর আয়ও বেশি না। সন্তানদের বায়না ফেলতে পারছিলেন না রেখা। এদিকে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে ঢুকতেই কিছুটা হাসি ফুটেছে তাঁর। 


    সোমবার সকালে হাজার টাকা তুলে আনেন ব্যাঙ্ক থেকে। বাড়িতে জমানো কিছু টাকা সহ দুই সন্তানকে নিয়ে আসেন দিনহাটায়। ছেলেমেয়ের জামাকাপড় কেনার জন্য দুপুরে চওড়াহাট বাজারের কাপড় হাটির অলিগলি ঘোরেন। সন্তানদের পছন্দমতো পোশাক কিনে দিতে পেরে খুশি দু’জনই। রেখার মতো পুজোর মুখে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা তুলে দিনহাটা শহরে ভিড় করছেন শ’য়ে শ’য়ে মহিলা। আকাশ পরিষ্কার থাকায় জমেও উঠেছে ব্যবসা। শেষ তিন দিনে কয়েক লক্ষ টাকার বিকিকিনি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। 


    লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা তুলে আনা মহিলাদের ভিড়ে হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ীদের মুখেও। দিনহাটা মহকুমার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মহিলারা চওড়াহাট বাজারে আসছেন। কাপড় হাটির বিভিন্ন দোকানের দরদাম করে নতুন জামাকাপড় কিনছেন তাঁরা। এদিকে চতুর্থীতেই দিনহাটার অধিকাংশ পুজোর উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে। নতুন কাপড় কিনে বাড়ি ফেরার পথে তাঁরা মণ্ডপে প্রতিমা দর্শনও করে যাচ্ছেন। 


    সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার আগে বাসন্তীর হাটের রেখা রায় বলেন, সোমবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা তুলেছি। সেই টাকার সঙ্গে বাড়িতে জমানো কিছু টাকা দিয়ে দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে দিনহাটা শহরে এসেছি। নতুন জামা কিনে দিয়েছি ওদের। মণ্ডপে গিয়ে কয়েকটি প্রতিমাও দেখে এসেছি। 


    চওড়াহাট বাজার বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, তিন দিন থেকে মহিলাদের ভিড় বেড়েছে বাজারে। খোঁজ নিয়ে জানলাম লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ঢুকেছে। হয়তো সেকারণে কাপড় কিনতে আসছেন তাঁরা। তাছাড়া আকাশ পরিষ্কার রয়েছে। গত ক’দিনে কয়েক লক্ষ টাকার বেচাকেনা হওয়ায় খুশি ব্যবসায়ীরা।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)