কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক ভাষণ অন্তর্বর্তী উপাচার্যের! ছড়াল বিতর্ক
বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সাংবাদিকতা বিভাগের ৭৫ বছরের সূচনা অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক ভাষণের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল নিযুক্ত অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য শান্তা দত্ত। সোমবার তাঁর বক্তব্য ঘিরে এমনই পর্যবেক্ষণ উঠে আসছে বিভিন্ন মহলে। তাঁদের বক্তব্য, সরকারের সঙ্গে শান্তাদেবীর বিরোধই তাঁর এই পদক্ষেপের কারণ। অগ্নিমিত্রা পাল বা মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়দের সঙ্গে তাঁর ভাষণকে পৃথক করা যায়নি। এদিন তিনি আর জি কর থেকে কুলতলি, সব ঘটনা নিয়েই সোচ্চার হয়েছেন বিভাগীয় অনুষ্ঠানের উপলক্ষ্যে। তিনি বলেন, বর্তমান সমাজে যা চলছে, তাতে মৃন্ময়ী মাদুর্গা নয়, চিন্ময়ী মাদুর্গা সবচেয়ে ব্যথিত। সবাই পথে নেমেছেন, তবে কারও মনে আনন্দ নেই। প্রতিবাদ জ্বলছে বুকে বুকে। প্রতিবাদের ভাষা নিয়ে সবাই নেমেছে রাস্তায়। আমার মনে হয়, যাঁরা উৎসবে পথে নেমেছেন, তাঁদের একবার প্রতিবাদের মঞ্চ (ধর্মতলায়) ছুঁয়ে যাওয়া উচিত। এখানেই থেমে না থেকে তিনি প্রশাসন তথা সরকারের সরাসরি সমালোচনাও করেন।
তিনি বলেন, যেসব চিকিৎসক আন্দোলনের দিশা দেখালেন, তাঁদের আন্দোলনে মঞ্চ খুলে দেওয়া হচ্ছে, বাধা দেওয়া হচ্ছে। সেটা কি আদৌ করা উচিত? এই চিকিৎসকেরা বয়সে ছোট। তাঁদের পাশে থাকা উচিত ছিল। কিন্তু একের পর এক খারাপ ভাষায় তাদের আক্রমণ করা হচ্ছে। এটা কী ধরনের নোংরামি? সমাজ কলুষিত হচ্ছে, অপমানিত হচ্ছে। এই বিষয়ে আমাদের আরও বেশি ভাবতে হবে। আর জি কর এবং কুলতলির শিশু ধর্ষণের কথা তুলে ধরে তিনি শাসক দলের সমালোচনাও করেন। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, বাংলায় একটি প্রবাদ রয়েছে মরণকালে হরির নাম। এখন দেখছি মরণকালে রামনাম করা হচ্ছে। এটা বোধহয় নয়া আমদানি।
প্রসঙ্গত, সার্চ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়া উপাচার্য নিযুক্ত হবেন। সেদিকেই তিনি ইঙ্গিত করেছেন বলেন মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এদিন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে প্রাক্তন এবং বর্তমান ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের একটি শোভাযাত্রা ক্যাম্পাস থেকে রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার পর্যন্ত যায়। বিভাগীয় প্রধান পীযূষকান্তি পাণিগ্রাহী জানান, ৭৫ বছর উপলক্ষ্যে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরের সেমিনার, ওয়ার্কশপ প্রভৃতি আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।