আগরপাড়া জুট মিলে অনুপ্রবেশ, লুটে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ
এই সময় | ০৮ অক্টোবর ২০২৪
কৌশিক প্রধান
এই সময়: পুলিশের প্রত্যক্ষ মদতে দুষ্কৃতীদের ঢুকিয়ে দিয়ে আগরপাড়া জুট মিলে হামলা চালানো, লুঠ এবং পণ্য চুরির মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের পর্যবেক্ষণ, ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করার ক্ষেত্রে রাজ্য পুলিশ আপস করেছে। তাই অবিলম্বে পুলিশকে এই অভিযোগের তদন্তভার সিবিআইকে হস্তান্তর করতে হবে। আগামী ১১ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানিতে সিবিআইকে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট দিতে হবে।ঘটনার সূত্রপাত ৩ অগস্ট। আগরপাড়া জুট মিলের সামনে জড়ো হয়েছিলেন কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। মিলের তরফে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু, রাত ৯টা নাগাদ পুলিশ র্যাফকে সঙ্গে নিয়ে এসে মিলের গেট খুলিয়ে ওই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের মিলে ঢুকিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। ওই ব্যক্তিরা জানান যে, ‘রিজেন্ট বিনিময় প্রাইভেট লিমিটেডের’ নামে তাঁরা ওই মিলটি চালাবেন।
রাজ্য প্রশাসনের একাংশের মদতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের মিলে অনুপ্রবেশ নিয়ে ৪ অগস্ট কামারহাটি থানায় অভিযোগ দায়ের করে আগরপাড়া জুট মিলস লিমিটেড (এজেএমএল)। এ নিয়ে ৬ অগস্ট হাইকোর্টে রিট পিটিশন মুভ করে এজেএমএল। সংস্থাটি জানায়, গত প্রায় ৪০ বছর ধরে তারা মিলটি চালাচ্ছে।
সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর সোমবার বিচারপতি ভরদ্বাজের পর্যবেক্ষণ, এই ঘটনায় রাজ্য পুলিশ কর্তৃপক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে আগরপাড়া জুট মিলে বেআইনি কার্যকলাপে মদত দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের ক্ষেত্রে পুলিশ আপস করেছে বলে আদালত মনে করে। বিচারপতি জানিয়েছেন, ৩ অগস্ট রাতে আগরপাড়া জুট মিলে র্যাফের প্রবেশ অবৈধ। কারণ, বড় মাপের সাম্প্রদায়িক অশান্তি, হিংসাত্মক দাঙ্গার মতো পরিস্থিতির মোকাবিলাতেই বিশেষ বাহিনী র্যাফ মোতায়েন করা হয়।
আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে, ‘রাজ্য মূল ভিডিয়ো-প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে স্পষ্ট যে, বিবাদীপক্ষদের বাঁচাতে তথ্য চাপা দিচ্ছিল পুলিশ। আদালত নিশ্চিত হয়েছে যে, রাজ্য পুলিশ তদন্তের নিরপেক্ষতার প্রশ্নে আপস করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যেতে তাদের উপর আস্থা রাখা যায় না।’
হাইকোর্ট নির্দেশে জানিয়েছে, ঘটনার তদন্তের জন্য কেস ডায়েরি-সহ এফআইআর ও সব নথি পুলিশের তরফে দু’দিনের মধ্যে সিবিআইকে হস্তান্তর করতে হবে। আইনি প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস ফেরানোর জন্য সিবিআই তদন্ত জরুরি বলে জানিয়েছেন বিচারপতি।