পার্ক স্ট্রিটে সিভিককে হেনস্থায় ধৃত এসআই, ২৪ ঘণ্টায় জামিনও!
এই সময় | ০৮ অক্টোবর ২০২৪
এই সময়: পার্ক স্ট্রিট থানার মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের শ্লীলতাহানির ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হলেও ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জামিন পেয়ে গেলেন অভিযুক্ত কলকাতা পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর অভিষেক রায়। সোমবার তাঁকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হলে এক হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেন বিচারক।অভিষেক পার্ক স্ট্রিট থানাতে-ই এসআই পদে কর্মরত ছিলেন। এদিন জামিন পেলেও আপাতত তাঁকে 'ক্লোজ়' করেছে লালবাজার। শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত-ও। জামিন প্রসঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ারের পরিবারের অভিযোগ, 'থানার ভিতরে এত ঘৃণ্য কাজ করা সত্ত্বেও ঠিকভাবে কেস লেখা হয়নি। পুলিশ অফিসারকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। এর প্রতিবাদে আমরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছি।'
পার্ক স্ট্রিটের এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ সোমবার বলেন, 'থানায় ঘটেছে বলে বিষয় নয়, কিছু অপরাধ থাকে যেগুলো সামাজিক ভাবে আপত্তিকর কাজ। শুধু আজকের কথা বলা হচ্ছে, রামায়ণের কথা ভেবেছেন, সীতাকে রাবণ নিয়ে চলে গেল, ভেবেছেন, কত বছর আগে থেকে এই সমস্যাগুলি রয়েছে। দ্রৌপদীকে একা পেয়ে কী কাণ্ড করা হয়েছিল? এই সমস্যাগুলো পুরাণ ইতিহাসের সময় থেকে রয়েছে। সমাজ সচেতন না হলে এগুলো আটকানো সম্ভব?'
যদিও এই ঘটনা নিয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'থানার মধ্যে সিভিক পুলিশের শ্লীলতাহানি করে পত্রপাঠ জামিন পেলেন অফিসার। এ ধরনের অপরাধের মোকাবিলায় সরকারের যে কঠোর মনোভাব নেই, তা এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট।'
অভিযোগ, গত শুক্রবার রাতে শারীরিক নিগ্রহের ঘটনার পরে এফআইআর নিতে অস্বীকার করেছিলেন পার্ক স্ট্রিট থানার ডিউটি অফিসার। মিটমাট করে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল নির্যাতিতাকে। তাঁর অভিযোগ, ওই দিন রাত ১টা ১০ মিনিট নাগাদ থানার তিনতলায় বিশ্রামকক্ষে তাঁকে পোশাক দেওয়ার নাম করে ডেকে পাঠানো হয়েছিল।
এর পর মদ্যপ অবস্থায় শ্লীলতাহানি করেন ওই অফিসার। পুলিশ সূত্রে খবর, বিশ্রামকক্ষে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। বাইরে এবং আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। রবিবার ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দেন। এর পরেই ওই অফিসারকে ক্লোজ় করা হয়েছিল। সোমবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তরুণীর পরিবারের এক আত্মীয় বলেন, 'আমরা সঠিক তদন্তের আশ্বাস পেয়েছিলাম। তা হলে কী ভাবে জামিন পেয়ে গেলেন ওই পুলিশকর্মী? তবে আইনি লড়াইয়ের পথ থেকে সরছি না।' নির্যাতিতার অভিযোগ, সেপ্টেম্ব মাসের ২৫ তারিখও কম্পিউটার রুমে মদ্যপ ওই এসআই দুর্ব্যবহার করেছিলেন তাঁর সঙ্গে।