সিঁড়ি দিয়ে উঠে যেতে হবে প্রায় চল্লিশ ফুট। ঠিক যেমন খেলা দেখার সময়ে স্টেডিয়ামে উঠতে হয়। তারপরেই চোখের সামনে বিশাল মাঠ। গোলপোস্ট। গ্যালারি। এই সবই অবশ্য তৈরি করা হয়েছে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের আদলে। বসিরহাটের অভ্যুদয় ক্লাবের পুজোর চমক এমনই। ‘বাঙালির মননে ফুটবল’ থিমে এ বার জমজমাট ক্লাবের পুজো।
মন্ডপের সামনে গেলেই ফুটবলের আবহে ভেসে যেতে হবে। পুরো প্যান্ডেল জুড়ে কিংবদন্তি বাঙালি ফুটবলারদের বিশাল-বিশাল ছবি। মিহির বসু, অলোক দাস, দীপেন্দু বিশ্বাস, হাবিবুর রহমানের মতো বসিরহাটের ভূমিপুত্ররা তো আছেনই, সঙ্গে মেহতাব হোসেন, রহিম নবি, অসীম বিশ্বাসদের ছবিও আকর্ষণ বাড়িয়েছে। একই সঙ্গে মেসি এবং রোনাল্দোর সঙ্গে রয়েছেন সুনীল ছেত্রী। যেহেতু দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সর্বাধিক গোল করার নজিরে বিশ্বের দুই কিংবদন্তির সঙ্গে নাম লিখিয়েছেন সুনীল। তাই, প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে সম্মান জানিয়ে আলাদা স্ট্যান্ড করা হয়েছে। সব মিলিয়ে পুরো প্যান্ডেল জুড়ে শুধুই ফুটবল আর ফুটবল।
কেন এমন ভাবনা?
ক্লাবের সম্পাদক অর্ণব ব্রহ্মর কথায়, ‘বসিরহাট ফুটবলের শহর। এখান থেকে বহু ফুটবলার উঠেছেন যাঁরা দেশ কাঁপিয়েছেন। কিন্তু, এখন শুধু আর বসিরহাট নয়, বাংলা থেকেই বাঙালি ফুটবলার হারিয়ে যাচ্ছে। তাই, মানুষের মনে চেতনা ফিরিয়ে আনতে আমরা বাংলার ফুটবলকে থিম হিসেবে বেছে নিয়েছি। যা নিয়ে প্রবল সাড়া পড়েছে মানুষের মধ্যে। দীপেন্দু বিশ্বাস নিজে এসেছিলেন আমাদের পুজোর উদ্বোধনে।’
তবে সেরা আকর্ষণ আস্ত একটা স্টেডিয়াম। ঠাকুর দেখে সবাই সিঁড়ি বেয়ে ওই স্টেডিয়াম দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। স্টেডিয়ামে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল এবং মহামেডান ক্লাবের পতাকা-লোগো রয়েছে। রয়েছে বিশাল আকারের একটি বল। সবুজ মাঠে যেন শুধু খেলতে নেমে পড়ার অপেক্ষা। ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে।
সব মিলিয়ে অভ্যুদয় ক্লাবের ভাবনা বাংলার ফুটবলের মরা গাঙে জোয়ার আনতে পারে কি না, নজর থাকছে সে দিকেও।