• স্বপ্নাদেশ পেয়েই তালপাতার ঘরে পুজোর প্রচলন করেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের বংশধর
    এই সময় | ০৮ অক্টোবর ২০২৪
  • এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের নাম। তাঁরই বংশধর শিবচন্দ্র রায়ের হাত ধরে শুরু হয়েছি এই পুজো। উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের রায় বাড়ির এই পুজো সবার কাছে পরিচিত বুড়িমার বা বুড়োমার দালানের পুজো হিসেবে। এই পুজোর প্রতিমার সঙ্গে অনেকটাই মিল আছে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির রাজরাজেশ্বরীর। এরই সঙ্গে ৩৫৪ বছরের প্রাচীন এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা জনশ্রুতি এবং হাজারও গল্পকথা। বিসর্জনের সময় প্রতি বছর প্রতিমাকে নিয়মমাফিক দাঁড় করানো হয় এক মুসলিম পরিবারের বাড়ির সামনে। তারপরেই নিরঞ্জনের জন্য এগিয়ে যাওয়া হয়।পরিবারের সদস্যরা জানান, দত্তপুকুরে এই দুর্গাপুজোর প্রচলন করেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের বংশধর শিবচন্দ্র রায়। এই পুজোকে ঘিরে রয়েছে নানা কাহিনী। তাঁরা জানান, নৌকাবিহারে বেরিয়ে ঝড়জলের রাতে শিবচন্দ্র আটকে পড়েন দত্তপুকুরে। সেই রাতে রাজাকে স্বপ্নে দেখা দেন দুর্গা। স্বপ্নাদেশ পেয়ে তালপাতার ঘর বানিয়ে পুজো শুরু করেন তিনি। পরবর্তীকালে রাজা শিবচন্দ্রের নামেই দত্তপুকুরের এই অঞ্চলের নাম হয় শিবালয়।

    এই পরিবারের সদস্য সত্যনারায়ণ শিট জানান, শিবচন্দ্রের স্বপ্নে দেখা দেবীর প্রথম বছরের পুজোর আচারের কাজ করেছিলেন এক বৃদ্ধা। তাই এই দালানের নাম করা হয় ‘বুড়োমার দালান’। এখানে দেবীর বাহন সিংহের মুখ ঘোড়ার আদলের। সেই সঙ্গে দেবীর দুটি হাত প্রকাশ্যে থাকে। বাকি আটটি হাত লুকানো থাকে চুলের মধ্যে। তিনি বলেন, ‘সময়ের সঙ্গে তালপাতার বদলে পাকা দালান করা হয়েছে। তবে সাড়ে তিনশো বছর ধরে একই নিয়ম এবং নিষ্ঠা মেনে পুজো হয়ে আসছে।’

    একই সঙ্গে প্রাচীন নিয়ম মেনে আজও কায়পুত্রপাড়ার মানুষের কাঁধে চেপেই বেদিতে অধিষ্টিত হন দুর্গা। বিসর্জনের সময়ও তাঁদের কাঁধে চেপেই দেবী পৌঁছে যান সুতি নদীর ঘাটে। পথে রহমত আলির বাড়ির সামনে দাঁড়ান দেবী। এই নিয়মও দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। সেই বাড়ি প্রদিক্ষণ এবং ওই পরিবারের সদস্যরা দেবীকে দর্শন করার পরেই বিসর্জনের জন্য এগিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয়দের বিশ্বাস, দেবী খুবই জাগ্রত এবং তিনি কারোর ইচ্ছা অপূর্ণ রাখেন না।
  • Link to this news (এই সময়)