আরজি কর কাণ্ডের পর জুনিয়র ডাক্তারদের সুরক্ষার দাবিতে অনশনের মাঝেই ফের চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনা। মহিলা চিকিৎসক ও মহিলা নার্সকে নিগ্রহ করার অভিযোগ রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে। রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতালে। তার জেরে নিগ্রহের অভিযোগ। প্রতিবাদে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু জুনিয়র ডাক্তারদের।সোমবার রাতে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ডে। রোগীর পরিবারের প্রায় ১৫ জন সদস্য মহিলা চিকিৎসক ও নার্সকে হেনস্থা ও গালিগালাজ করে বলে অভিযোগ। ঘটনার সময় সেখানে নিরাপত্তারক্ষী কিংবা পুলিশ ছিল না বলে জানিয়েছেন নিগৃহীতা নার্স। পুলিশে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
আরজি কর কাণ্ডের পরেই সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তা নিয়ে বারবার সোচ্চার হয়েছেন চিকিৎসকরা। অব্যাহত রয়েছে আন্দোলন। তারপরেও সাগর দত্ত হাসপাতাল থেকে মালদার রতুয়া ব্লক হাসপাতাল, একের পর এক সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্সদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। রায়গঞ্জ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কুমারজোল এলাকার বাসিন্দা নূরনেহা খাতুন (৬২) নামে এক মহিলাকে গত রবিবার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সোমবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। তারপরই উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতালে।
ডাক্তারদের অভিযোগ, জনা ১৫ লোক আচমকা ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ডে ঢুকে পড়ে কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসককে ঘিরে ধরে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং তাঁদের হেনস্থা করা হয়। কর্তব্যরত নার্স ঈশিতা জানা বলেন, ‘হামলার সময় নিরাপত্তারক্ষী বা পুলিশের দেখা মেলেনি। ঘটনার অনেক পর পুলিশ আসে।’ হাসপাতালে চিকিৎসক দত্তাত্রয় মুখোপাধ্যায় জানান, রোগীর মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের লোকজন মহিলা চিকিৎসক ও নার্সের উপরে চড়াও হন। তাঁরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বলে দাবি করেন ওই চিকিৎসক।
যদিও মহিলা চিকিৎসক কিংবা নার্সকে হেনস্তা বা দুর্ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মৃত মহিলার ছেলে মহঃ নাজিম। তিনি বলেন, ‘মায়ের কেন মৃত্যু হল তা জানতে চেয়েছিলা। রবিবার থেকে মা ভালো ছিল। স্যালাইন দেওয়ার আধ ঘণ্টার মধ্যেই মা মারা যায়।’ কাউকে হেনস্থা করা হয়নি বলে দাবি তাঁদের। ইতিমধ্যেই ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দু’জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের নাম মহঃ কায়ুম ও আরিফ সরকার। মঙ্গলবার তাঁদের রায়গঞ্জ জেলা আদালতে পাঠানো হয়েছে।