চালু হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে রাজ্য সরকারের ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্পের পঞ্চত্বপ্রাপ্তি ঘটল রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজও হাসপাতালে। রোগীমৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে সেখানে চিকিৎসক ও নার্সদের নিগ্রহের অভিযোগ উঠল রোগীর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় চরম ক্ষোভ ছড়িয়েছে হাসপাতালের কর্মীদের মধ্যে। তাদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি কাগুজে। এর সঙ্গে বাস্তবের কোনও সম্পর্ক নেই।
রোগী মৃত্যুতে কেন্দ্র করে ফের উত্তেজনা রায়গঞ্জ মেডিক্যালে। চিকিৎসক ও নার্সদের নিগ্রহের অভিযোগ। মৃতের পরিজনের ১৫ জনের একটি দল ঢুকে মহিলা চিকিৎসক ও নার্সদের উপর চড়াও এবং ধাক্কাধাক্কি করে বলে অভিযোগ। মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে নুরনেহা খাতুন বয়স , বাড়ি রায়গঞ্জ কুমারজল এলাকায়। ওই বৃদ্ধর মৃত্যুকে কেন্দ্র করেই বিবাদ শুরু হয়। রাত্তিরের সাথী প্রকল্প শুধু কাগজে কলমে, কোনো বাস্তবতা নেই। মেডিক্যালে কোনো নিরাপত্তা নেই বলে দাবী চিকিৎসক ও নার্সদের।
যদিও এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে দাবী মৃতার পরিজনেদের।পাল্টা নার্সরা দুর্ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ।
আরজি কর কাণ্ডের পর রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলির নিরাপত্তায় বিশেষ জোর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেজন্য গ্রহণ করা হয়েছিল একাধিক পদক্ষেপ। কিন্তু তার কোনওটাই যে ময়দানে কার্যকরী হয়নি বোঝা গেল সোমবার রাতে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের ঘটনায়। জানা গিয়েছে, নুরনেহা খাতুন নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয় হাসপাতালে। এর পরই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে মৃত রোগীর পরিবারের ১০ – ১৫ জন সদস্য হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসক ও নার্সদের নিগ্রহ করে বলে অভিযোগ। নার্সদের ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলেও অভিযোগ।
হাসপাতালের নার্স ঈশিতা জানা বলেন, ‘রোগীর অবস্থা প্রথম থেকেই খারাপ ছিল সেকথা তাঁর পরিজনদের জানানো হয়েছিল। বিকেলেও ডাক্তারবাবু সেকথা জানান। রাত ৮টা নাগাদ রোগীর মৃত্যুর পর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলেন রোগীর আত্মীয়রা। আমি তাদের বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করি। আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে তারা। বেঞ্চ তুলে মারতে আসে। আমি একজন নিরাপত্তারক্ষীকে বিষয়টি দেখতে বলি। তিনি আসতে অস্বীকার করেন। তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কে দেবে?’
তাঁর অভিযোগ, ‘হাসপাতালে কোনও নিরাপত্তা নেই। ফিমেল ওয়ার্ডে সারাদিন বহিরাগত পুরুষরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। মাঝে মাঝে নিরাপত্তা রক্ষীরা তাদের বার করে দেন। একদিক থেকে বার করেন আরেক দিক থেকে তারা ঢুকে পড়ে। কোথায় রাত্তিরের সাথী? কোথায় কী? আমাদের কোনও নিরাপত্তা নেই। আমাদের নিরাপত্তা কে দেবে? আমরা তো মার খেতে এখানে আসি না।’